মলয় রায়চৌধুরী

মলয় রায়চৌধুরী

বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০

তোমার তামাটে পা

 তোমার তামাটে পা


তোমার পায়ের দিকে চেয়ে থাকি, একদৃষ্টে সম্ভব নয় চেয়ে থাকা

কী বলে এই দৃশ্য ও অদৃশ্যের মাঝে দ্রুত ঝরোয়ার তামাটে গোড়ালিকে ?

পুরবীকল্যাণ, কামেশ্বরী, চারুকোষ, জনসন্মোহিনী আঙুলগুলোকে ?

পায়ের অবিস্মরণীয় স্মৃতিশক্তি আর কারোর দেখিনি কখনো

মনে হয় রেক্যুইয়েমের ইঙ্গিতবাহী তামাটে ঘনশ্যামা মন্দ্র সপ্তক

অথচ শব্দ নেই, বাতাসও নিথর, কেবল তোমার 

দুটি তামাটে পায়ের স্পর্শে পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরেই চলেছে


শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০

প্লাস্টিকের যুবতী

 

প্লাস্টিকের যুবতী


জাপান থেকে কিনে এনেছিলুম

প্লাস্টিকের সুন্দরী যুবতী

আমি অফিস চলে গেলে

প্লাস্টিকের যুবতী আমার বড়ো ছেলের 

সঙ্গে প্রেম করে

মেজোছেলেকে সঙ্গম করতে দ্যায়

আমি যেটা করি তাকে কী বলব ?

প্লাসটিকের যুবতীর সঙ্গে ওরা একখানা

নির্দেশিকা দিয়েছে :

যুবতীর মাথা উত্তরদিকে থাকলে

আপনার মাথা যেন দক্ষিণদিকে থাকে

আমার ছোটো ছেলে দক্ষিণপন্হী

সে নির্দেশিকা মেনে চলে

বড়ো ছেলে উপুড় করে প্রেম করে

আমি যা করি তা বলবার নয়

যখন চুমু খাই তখন প্লাস্টিকের যুবতী বলে ওঠে :

পৃথিবীকে তাড়াতাড়ি প্লাস্টিকমুক্ত করো নাগর

নয়তো তোমাদের সব্বাইকে আমি ভালোবাসায় ধ্বংস করব

কিন্তু নগদ জাপানি টাকায় কিনে এনেছি

তুলতুলে জাপানি ডলপুতুল

আমার পরের সাতজন্ম পর্যন্ত প্রতিটি

পুরুষের বউয়ের ভূমিকায় শোবে

মরার যখন তখন 

প্লাস্টিকের সবকিছুই সবাইকে মারবে




 







ছাই

 

ছাই


চিতার ওপরে পা ছড়িয়ে উঠে বসতে বাধ্য হলুম

বগলে জমে থাকা সারা জীবনের রোদগুলো চুলকোচ্ছিল

কুঁচকিতে আশ্রয় দিয়েছিলুম পূর্ণিমাকে, 

শেষে ঢুকে গেছে প্রোস্টেটে বলছিলেন অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান

বৌদ্ধধর্ম কাৎ মেরে ভিয়েতনামে সাম্যবাদে পালটে গেলে

চিতার ওপরে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লুম

বড্ডো দেরি করে হিন্দু পুরুতগুলো

টিকি থেকে কজনই বা আগুন তৈরি করেছে

জঠরাগ্নি

নৌকোয় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে চিতাগুলো

ভাসবে আকাশের কোথাও দলবেঁধে স্লোগান দেবে

ওনার সঙ্গে তিব্বতে চৌ অ্যাণ্ড লাইয়ের কবলে

মণিপদ্ম

কোলোম্বাসের মতন দিকমূর্খ হওয়া চিতাদের জরুরি

অনেক মাথা কেটে অ্যাজকটেক পিরামিড গড়েছিলুম

করোটি

অমর কেই বা হতে চেয়েছিল

সব ছাই ছাই




 
















শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০

রক্তানুরঞ্জন

 

রক্তানুরঞ্জন

দুই দল উলঙ্গ যুবতী আমার কাটা মাথা নিয়ে খেলতে নেমেছে
রক্তের জলাশয়ে - এক-একটা দলে চারজন ড্রাইভার, একজন
ফ্লোটার ব্যাক একজন ফ্লোটার ও একজন গোলরক্ষক খেলছে
রক্তানুরঞ্জন গ্যালারিতে ঠাশা পুরুষ দর্শকদের ওসকাতে,
নারীরা এই খেলায় অংশ নিতে পারে দর্শকাসনে বসতে পারে না
যখন ছুঁড়ছে মাথা ওপরে হাওয়ায় দেখছি প্রতিটি দর্শকই আমি
বিভিন্ন বয়সের আমি বালক কিশোর ছোকরা যুবক প্রৌঢ় বুড়ো
চিৎকারে চাঙ্গা করতে চাইছে এই বা ওই পক্ষের যুবতীদলকে
আমার যাতনার কথা ভাবছে না দর্শক আর খেলুড়ে মেয়েরা
যে রক্তে খেলতে নেমেছে তাও আমার দেহ থেকে বের করা
কখনও ভাবিনি আমার শরীরে এরকম আগুনের রক্ত আছে
কেউকেউ তালুতে রক্ত নিয়ে পান করছে যাতে কাহিল না হয়
কয়েকজন সশব্দে চুমু খাচ্ছে আমার মাথাকে দুই হাতে নিয়ে
খোলা বুকে চেপে ধরছে যাতে আমি প্রণয়ের দুধ খেতে পারি
এক দলের যুবতীদের ক্রিম-দুধ নোনতা আরেক দলের মিষ্টি
দর্শকরা আমার হাজার নাম ধরে চেঁচাচ্ছে ‘দুর্যোধন সেঁটে যা,
মেঘনাদ আইসক্রিম চেটে নে, গালে চুসকি মার রে মারীচ,
শম্ভু-নিশম্ভু কায়দায় কামড়ে ধর, চন্দ্রবোড়া দাঁত বসিয়ে দে
হিরণ্যাক্ষ, না পারলে হিরণ্যকশিপুর মতন মুখে জিভ ঢোকা
কী রে, হাত থেকে সহজে বেরোসনি, কষে খোঁপা কামড়ে ধর,
হ্যাঁ, একবার নোনতা আর একবার মিষ্টি স্বাদ নিয়ে খেলে যা
দর্শকাসনে বসে আমিগুলো আমার মাথাকে সমর্থন যোগাচ্ছে
এটা আজকের ব্যাপার নয় হাজার হাজার বছর চলছে এ-খেলা

বৃহস্পতিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২০

আমার ভেতরে নিমাই সন্যাসী চোর-পুলিশ খেলছিল

 

আমার ভেতরে নিমাই সন্যাসী চোর-পুলিশ খেলছিল


ভারি সোনার মোড়কে আমার লাশ, সে-ই আমার সখা

আমার মুখের সোনালী মুখোশ খোলা হয়, লিনেনে প্যাঁচানো 

নুন-মাখানো পা থেকে তিন হাজার বছরের আটক নাচগুলো 

শতশত নদী হয়ে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো জগতসংসারে

নদীগুলোকে উড়তে শিখিয়েছিলুম বাষ্প হয়ে ভাসতে

ওরা তো নাকে ছেঁদা করে ঘিলু বের করে নিয়েছিল মরে যাবার পর

ফুসফুস নাড়িভুঁড়ি পাকস্হলী বৃক্ক কিচ্ছু নেই আমি একেবারে ফাঁপা

না, ঠিক ফাঁপা নয়, করোটি থেকে পায়ের ডগা পর্যন্ত বাতাসে ভরপুর

মৃত্যুর আরামে শুয়ে আছি আর সময়ের নদী তৈরি করছি

অথচ আমি আমার মধ্যে নেই নিয়ে গেছে নদীদের ডাকাতদল

আমি খুঁজে মরছি তাদের হেই থামো হেই থামো থামো থামো



কমিউনিজমে দীক্ষা

 

কমিউনিজমে দীক্ষা


মাথার ওপরে মশার গুলতানি নিয়ে স্কুলের মাঠে আমরা আট সহপাঠী

তরুণ শুরের দাদুর দাদুরা কোমপানি বাহাদুরের শুঁড়ি ছিল

সেই মোহরের জোরে ওর বাবা-কাকারা চাকরি করেনি কখনও

মলমের চোঙ টিপে দুধ বের করে বুরুশ দিয়ে দাঁত মাজে

তরুণদের কুকুরের নাম কুকুর, ওই নামে ল্যাজ দোলায়

ওর বোতামবুকো বোনকে বলেছি ফ্রক ছেড়ে এবার শাড়ি ধর

তরুণদের বাড়িতে চকচকে সোভিয়েত দেশ পত্রিকা আসে

তরুণকে জিগ্যেস করতে বলেছিল কমিউনিস্ট হয়ে যা ফ্রি পাবি 

পড়ার টেবিলের সামনে  দেয়ালে রুশ মেয়েদের উরু কেটে সেঁটেছে

অ্যালজেব্রা ট্রিগনোমেট্রি ফটাফট হয়ে যায়, চকাচক, জাস্ট টুসকি

আমাদের মধ্যে ও-ই বাড়ি থেকে হাত খরচ পায়, খাওয়ায়

একটা বাক্সঠেলা গাড়ি যাচ্ছিল, তরুণ সেইদিকে দৌড়িয়ে বলল

দাঁড়া আনছি, কাঠিতে জড়ানো মালাই, কুলফি কিংবা র‌্যাঁদামারা

রঙিন বরফকুচি নয়, দিল তররররররর হয়ে যাবে চাটতে চাটতে

কিনে এনে ঘাসে বসে মোড়ক খুলে পুরোটা মুখে ঢুকিয়ে চাটলো

এক -এক করে আমরা সবাই অমনভাবে তরররর-হৃদয়ে  চাটলুম

ঘুরে তরুণের কাছে পৌঁছোতে ও জিভ পাকিয়ে ডাঁটি চুষলো, বলল 

দেখলি তো, ভদ্দরলোকের পোলা থেকে কমিউনিস্ট করলুম তোদের










বুধবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২০

পারিজাত

 

পারিজাত


নরম তোষকে পা ছড়িয়ে বসেছিলে তুমি, বালিশে হেলান দিয়ে

দামি আলোয়ানে ঢেকে রেখেছিলে পা পর্যন্ত

বললে, “আপনার কুখ্যাতি সৌম্যকান্তি করে তুলেছে আপনাকে”

এরকম কথা শুনে বিব্রত বোধ করেছিলুম, মনে আছে

তোমার সামনের ইরানি জাজিমে বসেছিলুম আমরা কয়জন

তোমার আত্মীয়কে ডেকে আমাদের দিয়েছিলে নেপালি পানীয়

গম থেকে তৈরি মদ, কাঁসার বাটি করে, সঙ্গে মোষের মাংস

বলেছিলুম, “তুমি ক্লিওপেট্রার মতো বসে আছো, তেমনই গর্বিনী”

বলেছিলুম, “তোমাকে দেখে সোয়ান লেকের ব্যালেরিনার কথা মনে পড়ে গেল”

চাদর সরিয়ে তুমি শৈশবে পোলিও আক্রান্ত পা-দুটি দেখিয়েছিলে

কতো সুন্দর লেগেছিল তোমার ওই দুইখানা পা, পারিজাত,

তোমার সাহসকে প্রণাম জানিয়েছিলুম

প্রতিষ্ঠানবিরোধী   নেপালি কবিতার সম্রাজ্ঞী তুমি
















কন্ডোমের শবাভিষেক

 

কন্ডোমের শবাভিষেক


রাজকমল চৌধুরী হাসপাতালে ভর্তি শুনে দেখতে গিসলুম

বিছানায় শুয়ে আর ওকে ঘিরে চেয়ারে তরুণ কবিরা

আমাকে দেখে উঠে বসতে যাচ্ছিল, নার্স শুইয়ে দিল

যাক, ওর বউ নেই , নয়তো দুষতো আরেকবার

কলকাতায় আমার কুসঙ্গে পড়ে গাঁজা চরস খালাসিটোলা

ওর ফুসফুস লিভার কিডনিকে ঝরঝরে করে দিয়েছে

ফালগুনীর দিদিও আমার মাকে একই কথা বলেছিলেন

রাজকমলের সঙ্গে ওর গাঁয়ে গিয়ে ছিন্নমস্তার থানে

বলি দেয়া মোষের মাংস খেয়ে সারাগায়ে রক্ত মেখে

নেচেছিলুম সে-এক অমাবস্যার রাতে বেহেড দু-ঠ্যাঙে

সবাই চলে যেতে আমার হাত ধরে টানলো রাজকমল

ভাবলুম গোপন কোনো কথা বলবে দ্বিতীয় বউয়ের

তা নয়, উঁচু গলাতেই বলল, একটা কন্ডোম আনিস

নার্সের দিকে ইশারা করে বলল, ও রাজি আছে--

মালায়ালি নার্সও ঘাড় নেড়ে মৃদু হেসে জানালো সন্মতি

পরের দিন সন্ধ্যায় নিয়ে গিয়েছিলুম বিদেশি কন্ডোম

ঘরে কেউ নেই, ধবধবে বিছানায় নতুন চাদর

সেই নার্সকে খুঁজে জিগ্যেস করার আগে বলল

রাজকমল  সকালে মারা গেছে, বাড়ির লোকেরা এসেছিল

কন্ডোমটা কীই বা করব, পেছনে গঙ্গায় গিয়ে ফেলে দিয়েলুম















মঙ্গলবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২০

শুধু কবিতার জন্য

 

শুধু কবিতার জন্য


সখা হে, শুধু কবিতার জন্য 

হাতে হাতকড়া কোমরে দড়ি বাঁধা হেঁটেছি রাজপথে

সখা হে, শুধু কবিতার জন্য 

হাতে হাতকড়া কোমরে দড়ি উঠেছি লকাপে

সখা হে, শুধু কবিতার জন্য 

বাবার আলমারি ভাঙচুর করে দাদুর ফোটো ছিঁড়েছে পুলিশ

সখা হে, শুধু কবিতার জন্য

মায়ের তোরঙ্গ ভেঙে বিয়ের বেনারসি ছিঁড়েছে পুলিশ

সখা হে, শুধু কবিতার জন্য

লড়ে গেছি, মাথা পেতে নিইনি কারাদণ্ডের আদেশ

সখা হে, শুধু কবিতার জন্য

পঁয়ত্রিশ মাস কাটিয়েছি আধপেটা একই পোশাকে চান করিনি

সখা হে, শুধু কবিতার জন্য

পঁয়ত্রিশ মাস মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজেছি কলকাতায়

সখা হে, শুধু কবিতার জন্য 

একক বেঁচে থাকার আহ্লাদই জন্নত স্বর্গ হেভেন যাই বলো

সখা হে, শুধু কবিতার জন্য

বেপরোয়া লিখেছি যখন যেমন ইচ্ছে কাউকে পরোয়া করিনি

সখা হে, শুধু কবিতার জন্য

দলহীন স্তাবকহীন মলয় রায়চৌধুরী হতে সবাই পারে না

সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০

মৃত্যু আমার শিষ্যা

 

মৃত্যু আমার শিষ্যা


শিষ্যা, হিজড়েরা যাকে বলে চেলি, তার ক্লায়েন্ট  

সময় ঘনিয়ে এসেছে, যদিও আমায় ঘিরে থাকা রাধা

আর গোপিনীদের বয়স আমার চেয়ে বেশি -- রাধা ফুচকায়

টোকো-রক্ত ভরে খেতে ভালোবাসে --- মলয় কুবাতাস মেখে

মলয়াতুর জলে ডুব দিয়ে তারা আর উঠে আসেনি

আমি করোটিতে তাড়ি নিয়ে খেয়েছি -- গোপিনীদের

নাভির জড়ুলের ওপরে রেখে -- আমার নামের জড়ুল

তারা আমার মায়ের পেটের বোন, ভয় দেখায়, আমি মুখ খুলি

প্রশান্ত মহাসাগর দিয়ে চাপা দেয় আমাকে, কেননা আমার

মৃত্যু নেই, ক্ষয় নেই -- মানুষ হয়ে জন্মালে মরে যেতুম একদিন

এমনই অভিশপ্ত যে সারা দেহে সুন্দরবন - বাঘের ডাকে থমথমে

রক্তের মধ্যে বাজপাখিরা ডুবউড়াল দিয়ে দুর্নাম ছড়ায়

শিষ্যার টনক নড়েছে  অনন্তকাল মলয়ঝড়ের কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে

বলাই রেগেমেগে কানাইতে ঢুকে হল্লার হলকা তোলে -- মনে আছে 

তো ? মহাপ্রস্হানের হাইওয়ে জুড়ে লাশের পর লাশ খুবলে খেয়ে

বেঁচে ছিল কতো শিষ্যা তাদের বাবার অনেকগুলো সংসার বলেছেন

গোপিনীদের কাঁখে পদ্মার ইলিশের গান বিয়া করো নাই ক্যান

সাবধান হই আমার গলার ওপর পায়ের চাপ দিয়ে হুকুম দেন 

সত্য বল আমার মুখে তাড়ির ফেনায় শিষ্যাদের মুর্শিদি গান

আরে শিষ্যা ভয় পাস কেন ? আমি বিরাশি বছরের গুরুদেব !


















এ নাও সর্বস্ব দিচ্ছি

 

এ নাও সর্বস্ব দিচ্ছি


এ নাও সর্বস্ব দিচ্ছি, তোমার তালিকায় টিক দিয়ে নাও এক-এক করে

পাটিপত্র পানখিল দধিমঙ্গল গায়ের হলুদে পাঠিয়েছিলুম মাথা কেটে

পাণিগ্রহণ ধৃতিহোম অরুন্ধতী নক্ষত্র দর্শন সম্প্রদানে দিয়েছি হৃৎপিণ্ডখানা

এবার গায়ের হলুদে নাও হাতের রেখা থেকে সব নদী ও সমুদ্রের ঢেউ

সাতপাক শুভদৃষ্টিতে নাও শিরায় বয়ে-চলা মোৎসার্ট সিমফনি

মালা বদলেতে নাও আমার ঘামের গন্ধ সাভানার পুরুষ সিংহের

অঞ্জলি ও সিঁদুরদানে দিয়ে দিচ্ছি অণ্ডকোষ-ভরা শুক্রকীটের সামগান

সর্বস্ব চাইছ বলে দিয়ে দিলুম উদ্যত  লিঙ্গখানা উপড়ে তোমাকেই



রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০

বিড়ালের রঙ

 

বিড়ালের রঙ


ঠিকই চিনেছি ; এই চিনা যুবতীই বাদুড়ের মাংস খেয়ে

পৃথিবীকে অতিমারীর কবরে ঢেকলেছে । দৌড়ে

জাপটে ধরি ওকে । কামড়ে ধরি ঠোঁট । কে জানে

বাদুড়ের গন্ধ কেমন কেননা মেয়েটার মুখ থেকে

যে গন্ধ পাচ্ছিলুম তা তো সোঁদা মিষ্টি সঙ্গমের ডাক--

আমার গলার মধ্যে জিভটা গলিয়ে দেয় আর সেটা

শঙ্খচূড় হয়ে নেমে যেতে থাকে তলপেট ছাড়িয়ে তলায়--

জাপটে নিয়ে আমি ওর যোনিকে শক্ত করে ধরি, আর

তখনই যোনির ভেতর থেকে বাইরে বেরিয়ে ওড়ে

চব্বিশ নদী  আঠারো পাহাড় জুড়ে ঝাঁক ঝাঁক

লাল রঙের নিশাচর ডানার বাদুড়, লাল টকটকে

একটা বাদুড়কে ধরে দেখি, আরে, বাদুড় তো নয়,

এটা তো মাও জে দঙের রেড বুক ! এখন বাদুড় !

যুবতীর ফিসফিসে কথা শুনে ইশারাটা টের পাই :

‘তোমার বিড়াল কালো বা সাদা যাই হোক , 

আসল কথা হলো ইঁদুর মারতে পারে কিনা৷'




















শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২০

আমার যোনি কেন যে নেই

 

আমার যোনি কেন যে নেই


বিরাশি বছর বয়স হয়ে গেল অথচ আমার যোনি নেই

বৃহন্নলা মানে হিজড়েরা যোনি চায় 

হয় এই না হয় ওই হবার জন্য

আমার যদি যোনি থাকতো তাহলে তার চারিপাশে

পোস্ত আর গাঁজাগাছ গজিয়ে নিতুম

তারা আমায় নেশায় ঢেকে ফেলতো

আমার মধ্যে লিঙ্গ ঢুকে এলে পোস্তর আঠা মাখাতুম তাকে

গাঁজার গন্ধে হইচই ফেলে দিতুম দুধে ধোয়া শিবলিঙ্গের মতন

অনেকের লিঙ্গকে ঢুকতে দিলে কেমন লাগে জানতে পারতুম

খাজুরাহোর তরুণীদের ঢঙে পাথর থেকে বেরিয়ে

পাথরেও যে যোনি লুকিয়ে থাকে তা কেউ কি জানতো

কোণারকের পাথরের তরুণীদের আগে 

পুরীর মন্দিরের তরুণীদের আগে

ছেনি-বাটালি দিয়ে কুঁদে-কুঁদে আদর করে তৈরি যোনি

আমিও খাজুরাহো কোনারক পুরী মীনাক্ষী মন্দিরে

লাবিয়া ম্যাহোরা খুলে দেশি-বিদেশি শ্রদ্ধালুদের দেখাতুম













বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২০

প্রেমিকার দুধ

 প্রেমিকার দুধ


আমি কখনও কোনো প্রেমিকার স্তনে দাঁত বসাইনি

প্রথম প্রেমিকারও নয়, যার 

বুকের দুঃখি পরাগরেণু আজও গালে লেগে আছে

মায়ের তো দুধই হতো না অতিফর্সা বুকে, তাই

ছোড়দি কোলে করে নিয়ে যেতো 

পাড়ার বউদের কাছে ; কাহার কুর্মি ডোম দুসাধ চামার

এমনকি দুস্হ মুসলমাননির এঁদো ভাঙাচোরা ঘরে

মায়ের স্তনে কিংবা সেইসব বউদের মাইয়েতে দাঁত

বসালে নির্ঘাৎ পাছায় চপেটা খেতুম--

তবে আজ ঘনদুধ খাই, সবুজ রক্তাভ নীল 

শাড়িপরা যুবতীর মাই থেকে

টিপে টিপে দুই বেলা দুধ বের করি

শেষ ওব্দি  শাড়িও খুলে ফেলে যেটুকু দুধ বাঁচে

তাও বের করে নিই ঘুম থেকে উঠে আর ঘুমোতে যাবার আগে

দাঁতকে ঝকঝকে করে তোলে ওনাদের দুধ

সেই বয়ঃসন্ধির পর যখন ভস্ম থেকে ছাড়া পেয়ে

টুথ পেস্ট টিউবের মাই থেকে 

প্রতিদিন টিপে টিপে দুধ বের করি









বখতিয়ারের ঘোড়ার বংশধর

 

বখতিয়ারের ঘোড়ার  বংশধর


বিহারশরিফে পৌঁছে দেখি বাস নেই ট্যাক্সি নেই

অগত্যা এক্কাগাড়িঅলাকে বলি

আরে টাঙ্গা, যাবি নাকি ? 

তোর ঘোড়াকে খেতে দিস না ? এমন হাড়গিলে ? নাম কী তোর ?

আমার নাম মিনহাজ হুজুর বলল এক্কাগাড়িঅলা ।

হাত দুটো লম্বাটে,  এরকম বেঁটে কেন তুই ?

ছোটাস কেমন করে গাড়ি ?

হুজুর জমানা পহেলে বখতিয়ার খলজি নামে তুর্কি এক লুটেরার সেনারা

এ-তল্লাটে এসে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে মেয়ে-বউদের ইজ্জত লুটেছিল

আমি সেই তাদের ঔরসের পয়দায়িশ--

আর হুজুর এটা ঘোড়া নয়, এটা তো খচ্চর

বখতিয়ারের ঘোড়ারাও এখানকার ঘোড়িদের ইজ্জত লুটেছিল

এই বেজন্মা খচ্চর তাদের ঔরসের পয়দায়িশ

ওরা সব কালা অকছর ভঁয়েস বরাবর ছিল

ন্যাড়ামাথা পড়ুয়ার দল আর হাজার-হাজার বই দেখে

নালান্দায় আগুন লাগিয়ে নেসতানাবুদ করে দিয়েছিল--

চলুন, বসুন, বলুন কোথায় যাবেন...