মলয় রায়চৌধুরী

মলয় রায়চৌধুরী

রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৬

মাথা কেটে পাঠাচ্ছি, যত্ন করে রেখো

মাথা কেটে পাঠাচ্ছি, যত্ন করে রেখো
মুখ দেখে ভালোবেসে বলেছিলে, "চলুন পালাই"
ভিতু বলে সাহস যোগাতে পারিনি সেদিন, তাই
নিজের মাথা কেটে পাঠালুম, আজকে ভ্যালেনটাইনের দিন
ভালো করে গিফ্টপ্যাক করা আছে, "ভালোবাসি" লেখা কার্ডসহ
সব পাবে যা-যা চেয়েছিলে, ঘাম-লালা-অশ্রুজল, ফাটাফুটো ঠোঁট
তুমি  ঝড় তুলেছিলে, বিদ্যুৎ খেলিয়েছিলে, জাহাজ ডুবিয়েছিলে
তার সব চিহ্ণ পাবে কাটা মাথাটায়, চুলে শ্যাম্পু করে পাঠিয়েছি
উলঙ্গ দেখার আতঙ্কে ভুগতে হবে না
গৌড়ীয় লবণাক্ত লিঙ্গ দেখবার কোনো স্কোপ আর নেই
চোখ খোলা আছে, তোমাকে দেখার জন্য সব সময়, আইড্রপ দিও
গিফ্টপ্যাক আলতো করে খুলো, মুখ হাঁ-করাই আছে
আমার পছন্দের ননভেজ, সন্ধ্যায় সিঙ্গল মল্ট, অবশ্যই খাওয়াতে ভুলো না
মাথাকে কোলেতে রেখে কথা বোলো, গিটার বাজিয়ে গান গেও
ছ'মাস অন্তর ফেশিয়াল করিয়ে দিও, চন্দনের পাউডার মাখিও
ভোরবেলা উঠে আর ঘুমোতে যাবার আগে চুমু খেও ঠোঁটে
রাত হলে দুচোখের পাতা  বন্ধ করে দিও, জানো তো আলোতে ঘুমোতে পারি না
কানে কানে বোলো আজও উন্মাদের মতো ভালোবাসো
মাথা কেটে পাঠালুম, প্রাপ্তি জানিও, মোবাইল নং কার্ডে লেখা আছে

শনিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৬

সেতারা মাহবুব-এর জন্য প্রেমের কবিতা

 উত্তর-সত্যের গূঢ় জগতসংসারে
শুভ-অশুভের বাইরে গোপন সুড়ঙ্গ এই প্রেমের কবিতা--
প্রেম? , প্রেম তো খুনোখুনি যুদ্ধ হানাহানি রক্তপাত ; 
প্রেমের কবিতা চুপিসাড়ে সরকারি নথিপত্র ছাড়া পার হয়
এ-সুড়ঙ্গে ধর্মের চাপাতি-ত্রিশুলধারীরা সব মরে পড়ে আছে
এ-সুড়ঙ্গে মতাদর্শের একনায়কেরা কখনও ঢুকতে পারে না
এ-সুড়ঙ্গে নিকৃষ্ট পোশাক পরে হাঁটে না ক্যাটওয়াকের পেত্নীরা 
এ-সুড়ঙ্গে আমাদের অনুপস্হিতি হাত ধরাধরি করে এপার-ওপার প্রতিরাতে
সীমার কাঁটাতার চেকপোস্ট এপারে-ওপার ঘুষ এ-সুড়ঙ্গে নেই; প্রেমের কবিতা
রান্নাঘরে গিয়ে ফিসফিসে কন্ঠে ডেকে বলবে তোমাকে, "সেতারা মাহবুব,
চলো, কেনই বা আমরা দুজনে এই তাচ্ছল্যঠাশা পৃথিবীর মনোরঞ্জনে
জীবন নষ্ট করি ?" প্রভাবিত হওয়া কি আতঙ্কজনক, ওয়েদিপাউসের 
ভুত এসে ঘাড়ে চেপে বলবে কি ইন্দ্রিয়ের বিলাসিতা থেকে 
বোধবুদ্ধি নির্বাসন দাও, বলো, বলো, সেতারা মাহবুব, কী রেঁধেছ ?
তোমাদের দেশে যাইনি কখনও, তাই, এখন সহজে,কবিতার সুড়ঙ্গ দিয়ে
পৌঁছে দেখছি, রেঁধেছ আমার জন্য, মূলা দিয়ে দেশি কইমাছ, 
পাঙাশ মাছের ঝোল, চিংড়ি করলা দিয়ে, পাবদা-বেগুন,
ইলিশ-খিচুড়ি, চাপিলা মাছের ফ্রাই, লটে মাছের ঝুরো, কাচকি-টোম্যাটো,
এতো পদ আমার জন্য তুমি রাঁধো, খেতে তো ডাকোনি কোনোদিন--
আমি তাকালেও, তুমি তো আমার দিকে চেয়েও দ্যাখোনি,
তোমার বাড়ির পথ ভুলে যাই, দেখি ফুটপাথ জুড়ে, কুয়াশা বিক্রি হয়--
গলিগুলো সরু থেকে আরও সরু , রাস্তায় থামের আলো
সন্ধ্যা হলে নিজের ছায়া নিয়ে পাক খায়, উত্তর-সত্যের পৃথিবীতে
চলে এসো চুপচাপ, সেতারা মাহবুব, প্রতিটি মহাকাব্যে এভাবেই
দু'জনের পালাবার গল্প লেখা আছে, ট্রয়ের জাহাজ ভেসে যাক, দেখা যাবে...

শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর, ২০১৬

ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়-এর জন্য প্রেমের কবিতা

অসহ্য সুন্দরী, আমার নিজের আলো ছিল না
তোর আলো চুরি করে অন্ধকারে তোরই ছায়া হয়ে থাকি
তোর আর তোর বরের মাঝে শ্বাসের ইনফ্যাচুয়েশানে
অসহ্য সুন্দরী, বেহালার কোন তারে তোর জ্বর, তা জানিস ?
জানি না কেমন করে রেমব্রাঁর তুলি থেকে পিকাসোর তুলিতে চলে গেলি-
তোর মাতৃতান্ত্রিক ইতিহাসের চেতনায়
তিনশো বছর পড়ে আছে সমুদ্রের গভীরতম জলে ভাঙা জাহাজে শেকলবাঁধা
সময়কালকে যে স্বরলিপিতে বেঁধে ফেলিস তা বলেছিস তোর বরকে ?
বলেছিস পরস্ত্রীকাতর প্রেমিককে মগজে চাকর করে রেখেছিস ?
সাঁতারু যেমন জলে সহজ তেমন তুই সময়কালে
অসহ্য সুন্দরী, আমাকে গড়ে নিয়েছিস ভয় যন্ত্রণা আনন্দের মিশেলে
অ্যানার্কিস্ট করে দিয়েছিস আমাকে
মনে রাখি যে ব্যথা আর দুঃখই আগুন, হে অসহ্য সুন্দরী
তোর আর তোর বরের মাঝে পরস্ত্রীকাতরতার শ্বাস
শুনতে পাচ্ছিস ? শোন, কান পেতে শোন...

শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৬

তানিয়া চক্রবর্তীর জন্য প্রেমের কবিতা

কী নেই তোর ? মরুভূমির ওপর আকাশে পাখিদের তরল জ্যামিতি
        প্রতিবাদ -- বিপদের ঝুঁকি -- সম্ভাব্যতা -- বিরোধ -- সমাক্ষরেখা --
        আমি তো লাল-ল্যাঙোট সাধু, আমি বাস্তব তুই বাস্তবিকা
কুলু-মানালির পাইন থেকে ঝরাচ্ছিলিস সবুজ ছুঁচের গোছা
        ক্ষান্তি -- পূর্বপক্ষ -- ধাঁধা -- গূঢ়গুণ -- শিল্পবর্ম -- মেজাজ -- সন্দেহ
        আমি তো ছায়াফোঁকা সাধু, তুই যতোদিন আছিস, মরব না
এক মিনিট দাঁড়া, "কোনো কিছু প্রিয় নয়", মানে ? 
        জানি রে জানি, অঙ্কুরের বোধ তার বীজে, অয়ি স্পন্দনসমঙ্গ
        আমি তো সীমাভাঙুনে সাধু, তোর রহস্য দখল করে দাম চুকিয়েছি
চাপাতি দিয়ে কেটে যেসব মেঘ নামিয়েছিলিস, অক্ষরগুলোর শ্বাস
        বানান ভুলে যায়, ফি-সেকেণ্ডে নাড়ি-ঘাতের হার বাড়িয়ে দিস
        আমি তো বুনোপ্রেমিক সাধু, আমার প্রেম বদনাম করবে তোকে
প্রাণচঞ্চল বাদামি পাথরের কাঁপুনি, অনুরণন, অয়ি প্ররোচনাময়ী
        অ্যানার্কি -- হাই ভোল্টেজ উল্কি -- ক্রিয়া না বিশেষ্য বুঝতে পারি না
        আমি তো মাটিতে পোঁতা সাধু, তুই খুঁড়ে তুলবি, বিপদে পড়বি
আমি ভাটিয়ালি গেয়ে বেড়াই, নৌকোর দাঁড় বাইনি কখনও
        আসলে গান তো নৌকোর, দাঁড়ের, নদীর স্রোতের, ভাটার টানের
        আমি তোকেইচাই-মার্কা সাধু, বাক্যদের উত্তেজিত কোন ম্যাজিকে করিস
এক মিনিট দাঁড়া, "কাউকে ভালোবাসিনি আমি" , মানে ?
        অয়ি ফাঁদগর্ভা, যখন কাঁটাগাছের দিকে জিরাফের জিভ নিয়ে যাস
        আমি তো ভাঙাগড়ার সাধু, পথ গুটিয়ে পাথর করে দিস
পৃথিবী থেকে ছবি খুঁটে-খুঁটে নিজের ব্র্যাণ্ডের ছাপ-ছোপ দিস
        টের পাই, কালো বিশ্ববীক্ষায় আমার নামের স্হায়ীত্ব নেই
        আমি তো সাধুপ্রেমিক তোর, পৃথিবীর নাম দিসনি কেন ?
অয়ি শব্দমোহিনী, না পড়েই উল্টে যাচ্ছি পাতার পর পাতা
        অস্হির কৌতূহলে এই কবিতাটা এগোচ্ছে আর তোকে শুনতে পাচ্ছে
        আমি তো বাকমোহন সাধু, লিখিসনি তো প্রেম কেন ভিজে এবং গরম
আসলে জীবন নষ্ট করার কায়দা সকলে জানে না
        ঘুম থেকে উঠে হাই তুলিস আর তোর গোলাপি আলজিভ দেখি
        আমি তো খুনির খুনি সাধু, যথেচ্ছ খরচ করিস শব্দ রজঃ টাকা
ম্যাডক্স স্কোয়ারের কুঁজো পুরুতের ঢঙে তোর আরতি করি
        তোর ইঙ্গুজের বেদনা যন্ত্রণা ব্যথা কষ্ট প্যানিক দিয়ে
        আমি তো হাজারঠ্যাং সাধু, গাছেদের ঝোড়ো চিৎকার
এক মিনিট দাঁড়া, "ব্যথা ছাড়া জীবনে আর কিছু নেই," মানে ?
        তোর কথার হাঁফ-আকূলতা আমার হৃদরোগের কারণ
        আমি তো ২৪x৭ সাধু, ফলো করি ফলো করি ফলো করি
মৃত্যু মানেই তো প্রতিশোধ মানুষের হোক বা প্রেমের
        দেখেছিস তো, যতো রাগি ঘুর্ণিঝড়, ততো সে দেশদ্রোহী
        আমি তো ল্যাঙোটহীন সাধু, দেখি অনুভবকে আঙ্গিক দিচ্ছিস
সঙ্গীত যেভাবে গানকে বিষাক্ত করে, আমার কপালে খুনির বলিরেখা
        ইটারনাল ব্লিস, রেড ওয়াইনে চোবানো তোর ছবির ঝুরো

সোনালী মিত্র'র জন্য প্রেমের কবিতা

পুরাণের সংস্কৃত পাতা থেকে নেমে এসে তুইই শিখিয়েছিলিস
কবির লেখকের গণ্ডারের চামড়া খুলে রাস্তার ভিড়েতে মিশে যেতে
তার আগে নিজেকে বড়ো উন্নাসিক ভেবে কাদার সুপারম্যান
হাতঘড়ির কলকব্জায় ঝড়েতে মেটাফরগুলো চালুনিতে চেলে
ভেবেছি পিস্তল পাশে নেই বলে আত্ম্ত্যা করিনি এখনও
দিল্লির নিম্নচাপে চোখ এঁকে ফিরিয়েছিলিস শব্দ ভিজুয়াল
তরোয়ালে আইনি ঝলকে লিপস্টিকে ছাপা অটোগ্রাফ
প্রতিটি বিপ্লবের দাম হয় বদলের বাজারও তো বসে
জুলিয়াস সিজারের গম্ভীর শেক্ষপিয়ারি সাহিত্যের গমগমা ছেড়ে
সাধারণ মানুষের মতো প্রেমিক চাউনি মেলি তোর কথা মেনে
বুড়ো বলে সক্রেটিস সাজবার সত্যিই দরকার ছিল নাকি
গ্রিসের গাধার ওপরে বসে আথেন্স বা কলকাতার পচাগ্যাঞ্জামে
ধুতি পরে ? কাঁধে উত্তরীয় ! সাহিত্য সভায় ? নাকের বক্তিমে ঝেড়ে ?
ভুলে যায় লোকে । মজার এ মরে যাওয়া । গন ফট । খাল্লাস ।
সোনালী প্রেমিকা ! তুইই বুঝিয়েছিলিস : হুদোহুদো বই লিখে
বিদ্বানের নাকফোলা সাজপোশাক খুলে দেখাও তো দিকি
কালো জিভ কালো শ্লেষ্মা কালো বীর্য কালো হাততালি
উলঙ্গ নাচো তো দেখি তাণ্ডবের আঙ্গিকবর্জিত তালে তালে
চুমুর পুনঃচুমু পুনঃপুনঃচুমু দিল্লির নিম্নচাপ মেঘে

এ দ্যাখ গণ্ডারের সত্য-শিব-সুন্দরের চামড়া ফেলে দিয়ে
আজকে পেয়েছি নখে প্রেমিকার চুলের জীবাশ্ম !

বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৬

স্বচ্ছ দেওয়াল

সে দেওয়াল কেমন দেখতে
জানে না
দেওয়ালটি যার সেও কখনও
জানেনি
সে কেবল জানে রয়েছে
দেওয়ালখানা
বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে রাখছে
সেই যুবকের জন্য
যাকে সে ভাঙতে দেবে
যুবকেরা তবু গলদঘর্ম হয়
স্বচ্ছ একটা পাতলা 
দেওয়াল ভাঙতে
হাজার হাজার বছর যাবত
চলছে দেওয়াল ভাঙা
রক্তের সাথে রসের তৈরি
সেই দেওয়াল
যার ভাঙে তার গর্ব ধরে না
যে ভাঙছে তারও
অহমিকা নাচে ঘামে
রসের নাগর খেতাব মিলেছে
প্রেমিকের
প্রেমিকা দেখাবে চাদরে রক্ত লেগে
অধ্যবসায়ে সময়ের সাথে লড়ে
দেওয়াল ভাঙার সে কি আনন্দ
দুজনেরই
যে ভাঙল আর যার ভাঙা হল
সেলোফেন ফিনফিনে
দেওয়াল না ভেঙে মানুষ
জন্মাবে না
তাই
সব দেওয়ালই 
স্বচ্ছ মাংসে গড়া
সেলেফেনে হোক কিংবা
লোহার ইঁটের অদৃশ্য
সীমারেখার
প্রেমের ঘামেতে ভিজিয়ে
ভেঙে ফেলা দরকার

সোনালী চক্রবর্তীর জন্য প্রেমের কবিতা

ব্যথা জখমকে ভালোবাসে -- মাংসকে ভালোবাসে ব্যথা --
সাধু হয়ে গেছি তো, নিভিয়ার মাস্ক পাউডার ছাই
বাড়িতে ল্যাংটো ঘুরে বেড়াই -- পোড়ানো পাণ্ডুলিপির গন্ধ মেখে --
ভালোবাসাকে ভালোবাসি -- অপ্রত্যাশিত সাক্ষাৎ --
সুরের নোনতা খসড়া বাঁধি -- স্মৃতি দাও -- স্মৃতি দাও --
উজবুক তাকাই ঈশ্বরীর ডিজিটাল অনুপস্হিতির ফ্রেমে --
নিকেলিত পূর্ণিমা, বেচারি ঈশ্বরী কেন এতো সুন্দরী ?
অবচেতনার খলিফার ফতোয়া -- আস্তিক হয়ে যা শিগ্গিরি --
হায় -- ঈশ্বরী তো নিজেই নাস্তিক --
বোকা নাকি -- সোনার হরিণ কেই বা চায় ?
লাভার ফুটন্ত বিছানায় -- খদিরচুল রূপসী -- নিঃসঙ্গতা আর বঞ্চনা --
আব্রাহামের তিন ছেলের রক্ত আমার গায়ে কেন ?
আমি তো ল্যাংটো খলিফা, নিভিয়ার মাস্ক পাউডার ছাই--
পঞ্চবটির হাইপাররিয়াল জঙ্গল তোকে ঘিরে 
ভবঘুরে -- কুঁজোশঠ -- নুলো -- টোটোবেকার _- খোচর --
নাঙবুড়ো -- লোফার -- নেশুড়ে -- মিথ্যুক -- জুয়ড়ি -- বেয়াদপ --
রাজনর্তক -- জ্যোতিষী তোর বাঁহাত কখন থেকে ধরে রেখেছে--
তুই তো এই শহর -- রাজপথ - রাস্তা -- লেন-- বাইলেন --
শেষই হতে চাস না শেষই হতে চাস না শেষই হতে চাস না
ব্যথায় ঢালাই নিজেরই গড়া আদল -- সেই যুবক তো ? চিনি আমি !
সে তোর মাংসে ব্যথার মতন আঁকড়ে থাকেনি -- যেমন আমি --
যখন সময় আসবে -- গায়ের সমস্ত পালক -- মখমল -- স্টিলেটো --
ভুরু কোঁচকানো জাদু -- তোর হাতে বটল ওপনার কেন ?
আমি তো সাধু হয়ে গেছি, নিভিয়ার মাস্ক পাউডার ছাই --
বাড়িতে ল্যাংটো ঘুরে বেড়াই -- প্রতিবেশিনীদের প্রিয় উন্মাদ --
সত্যের দপদপানিতে ঘায়েল -- চোখ বুজি -- একদিন তো সব যাবেই--
এখন নয় কেন ? খদিরচুল রূপসী ? তুই চাস নাকি সোনার হরিণ ?
বিশ্বাস করিসনি -- ভয় পাসনি -- যা হয়নি তা তোর নাগালে -- চেষ্টা ছাড়িসনি
ব্যথা মাংসকে ভালোবাসে -- আঘাতকে ভালোবাসে ব্যথা --

উপমা অগাস্টিন খেয়ার জন্য প্রেমের কবিতা

আমাদের দুজনের মাঝে একটা চুলের কাঁটাতারের সীমান্ত
একটা চুলের কাঁটাতারের ওই দিকে তিরিশ মিনিট আগে শুকতারা ওঠে
উপমাকে পেতে আমার সারা জীবন লেগে গেল, জানি পাবো না
পুরুষদের কাটা মাথার আবর্জনায় আমার মাথা তুই চিনতে পারিসনি
কবিতারা কেন যে উপমাকে বাদ দিতে গিয়ে শকুন কলোনিতে ঢোকে
আকাশে পাক ধরেছে, দেখতে পায় না
প্রেমের ময়াল প্যাঁচ, ভালোবাসা আমার পেশা
আগুনে পোড়ানো ছায়া পাঠিয়ে দেবো চুলের কাঁটাতারের ওই পারে
ঝিঁঝিপোকাদের কোরাস ভেবে তুই এড়িয়ে যাবি
অথচ আমিই তো সেইন্ট অগাস্টিন, ভালোবাসা আমার পেশা
মগজের ভেতরে তোর কন্ঠস্বর দিয়ে ফাঁদপাতা মাকড়সার জাল
বর্ষার ফোঁসফোঁসানি মেশানো তোর হাঁমুখের ইলশেগুঁড়ি
ঘুমোতে ঘুমোতে এক রাতে নিজের চামড়া খুলে  পৌঁছে যাবো
দেখবো খেয়ার ঠোঁট বিদেশ চোখ বিদেশ থুতনি বিদেশ চুল বিদেশ
হাত বিদেশ নাভি বিদেশ বুক বিদেশ আলিঙ্গন বিদেশ
গোলাপি পূর্ণিমার বিছানায় জন্মেছিলিস
তোর আব্বু আমায় আফ্রিকার মানুষ মনে করেছিলেন
কেননা তোর দিকে চাইলেই আমার দুই কাঁধ নেচে ওঠে
অথচ আমি সেইন্ট অগাস্টিন, ভালোবাসা আমার পেশা

অনামিকা বন্দ্যোপাধ্যায় -এর জন্য প্রেমের কবিতা

মনে থাকে যেন, রাজি হয়েছিস তুই, হাত ধরে নিয়ে যাবি নরকের খাদে
রাবণের, কর্ণের, ভীষ্মের, দুর্যোধনের আর আমার জ্যান্ত করোটি

হাজার বছর ধরে পুড়ছে অক্ষরে, বাক্যে, ব্যকরণে, বিদ্যার ঘৃণায়
মনে থাকে যেন, শর্ত দিয়েছিস, আমার সবকটা কালোচুল বেছে দিবি

তিনবুকের আধা বিদেশিনী, দুইটি বাঙালি বুক, একটি রেডিন্ডিয়ান
সফেদ বৃন্ত দুটো পুরুষের নামে কেন ? প্ল্যাটো ও সক্রেটিস ? বল অ্যানা

অ্যানা দি র‌্যাভেন কাক, ঠোঁটে রক্ত, উসিমুসি বুক, তৃতীয় কি টেকুমেশ চিফ ?
যেনি বলেছেন, কোয়াও-বোচি-ওয়ে আউ কি ( এই সুন্দর পৃধিবী )

বুৎ ওয়া তে ওয়া ( হায় ) ওয়াও-কোয়ন-অগ ( স্বর্গ )
সবকিছু নষ্ট করে দিচ্ছে এই শাদা লোকগুলো

ওদের জীবনে কোনো প্রেম নেই ; শুধু হিংসা, হত্যা, লোভ
অ্যানা, হাত ধরে নিয়ে চল রেডিণ্ডিয়ান প্রেমিকের

তাঁবুর সুগন্ধে, মনে থাকে যেন, রাজি হয়েছিস তুই, উসিমুসি বুক
সবকটা কালোচুল বেছে দিবি কোলে মাথা নিয়ে, অ্যানা, অনামিকা

আবার তোর সঙ্গে কবে দেখা হবে, ক্যামেরা মুখের কাছে এনে
তোর হাঁ-মুখের দেখাবি চটুল বিশ্বরূপ ! অ্যানা দি র‌্যাভেন ?

বদনাম হবার জন্য তৈরি হ, চল তোকে কুখ্যাত কুসঙ্গে নিয়ে যাই
 তোর স্বর্গে ছেটাই খানিক এই প্রেমিকের নারকীয় করোটির ছাই

কৃতি ঘোষ-এর জন্য প্রেমের কবিতা

এই সেই গালফোলা যুবতী
যাকে ওর বাবা ডাকে ডাবলিউ
রোদের সঙ্গে ষড় করে যে
আমার ছায়াকে ভাঙেচোরে সে
সিগ্রেট ফোঁকে বলে চুমু ওর
খাওয়া এক বাসি কার্ড এটিএম
পিন ওর দুই চোখে মিচকায় 
ইস্তিরি-করা মোর ভজনা
আমি ছিনু সতেরোশো শতকে
ও রয়েছে বাইশের কোঠাতে
যা নিয়েছি তা ফেরত দেয়া যাবে না
 উকুনের সাথে চুলে পুষেছি
মৎস্যবালিকা যার বুকে আঁশ
ও আমার পিন আপ পোস্টার
নদী ওর ঘাম ছাড়া বয় না
প্রেমিকেরা কারাগারে বন্ধ
ফোলাগাল ছুঁই ফেসবুকে রোজ
চুমু খাই সিগ্রেটি ঠোঁটে ওর
আমার কান দুটো কুমিরের
গিটার বাজিয়ে ডাকে আয় আয়
ও আমাব নিলামেতে কিনেছে
আক টাকা পঁয়ত্রিশ পয়সায়
চেন বেঁধে পথেঘাটে নিয়ে ঘোরে
তবু বলে তুতুতুতু আয় আয়