মলয় রায়চৌধুরী

মলয় রায়চৌধুরী

বৃহস্পতিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২০

কারে বোধি কয়

কারে বোধি কয়
অবন্তিকার পিতৃকুলে কেহ নাই, শৈশবে মরিয়া গেছে মাতা
সংসারত্যাগী পিতা ফেরে নাই
কোথায় গিয়াছে না জানিয়া, কী করিয়া বলেন ফেরে নাই
যাইবে তবে তো ফিরিবে, নৌকায়, ট্রাকে, ট্রেনে, পদব্রজে
পাশে কি যশোধরা নাম্নী স্ত্রী ও সন্তান ছিল
নাকি কাটিয়া পড়িয়াছে কপিলাবস্তুর রাজপুত্রের পিছু
বোধিলাভ ঘটিয়া থাকিবে, হয়তো তিনি জানিতেন
বোধিলাভে আধুনিক জীবনে কোনো লাভ নাই
কিন্তু এও মহা বিড়ম্বনা
বোধিলাভ হইয়াছে কি না, এবং হইয়া থাকিলে
ঢক্কানিনাদসহ জনেজনে প্রচার করার প্রয়োজন
আমরা কি জানি ফুটপাথে দড়িদঙ্কা পড়ে থাকা ভিখারিনী
বোধিপ্রাপ্তির পর পথপার্শে শুইয়া রহিয়াছে
মিউনিসিপালিটির ডোম বুঝিবে কেমনে ? ভিখারিনী
মহাপরিনির্বাণের পর পঞ্চভুতে বিলীন হইতে চাহে নাই !
কিংবা মর্গে রাখা বেওয়ারিশ লাশ যার দেহ বিক্রয়ের জন্য
ডোম ও ডাক্তার দরাদরি করিতেছে
ডাক্তারি শিক্ষার জন্য কঙ্কাল দুষ্প্রাপ্য আজ
হয়তো কোনো ডাক্তারি কলেজে পিতা অবন্তিকার
দণ্ডায়মান কাঠের বেদিতে শ্বেতশুভ্র কঙ্কালরুপে
অবন্তিকা শুনিয়া কহিল, ছ্যাঃ, এখন সেদিন আর নাই
বোধিপ্রাপ্তির মতো মানুষ পয়দা হয় না আর
এখন কেবল সঙ বহুরুপি দলদাস চশমখোরের সমাবেশ
ফর ঠিকেদার অফ ঠিকেদার বাই ঠিকেদার মহাবোধি
বিপ্লবের ভানসহ গদি দখল করে, কোতল উৎসবে মাতে
কেহ বলে পলাইয়া গিয়াছে বাপ, নকশাল দলে
কেহ বলে মৃত, নকশাল দলে মাথায় গামছা বাঁধা
ধরা পড়িয়াছে, কাঁধে সাতচল্লিশ রাইফেল
অগুস্তো পিনোশের সেনা চিলিতে লোপাট করিয়াছে
জেসি ইভান্সের ন্যায় গুড ব্যাড আগলি ফিল্মের
গুড লোকটির মতো স্বর্ণমুদ্রাসহ হারায়ে গিয়াছে
অথবা স্পার্টাকাসের দলে যোগ দিয়াছিল পিতাবাবু
আরজেনটিনার নোংরা যুদ্ধ লড়তে গিয়েছিল নাকি
মেশিনগানের আবিষ্কর্তার মতো নাম পালটায়ে
হিরাম ম্যাক্সিম নামে ফিরিয়াছে, কিন্তু গৃহে ফেরে নাই
আওয়ামি লিগের দলে বিএনপি দলে যোগ দিয়াছিল হয়তো বা
কখন কে উঠে চলে গেছে জানতে পারেনি কেউ
১৮৫৭ সালে নানা সাহেবের সঙ্গে ছিলেন কি তিনি
কাকরূপ পাইয়াছে, কিংবা হায়েনার দলবদ্ধ র‌্যালিতে
মাটিতে নোলা সকসকসহ টাটকা রক্তের গন্ধ খোঁজে
হয়তোবা স্ফিংকসের ঢঙে নাসিকাবিহীন দেহে
কোনো মরুপ্রান্তরে পর্যটকের জন্য যুগযু্গ বালুকাশীতল
মালয়েশিয়ার প্লেনে জলের ভিতরে গিয়া লীলা করিতেছে
রঙিন মৎস্যের ঝাঁকে হাঙরের বাঁকে, পেংগুইন দলে !
এভারেস্টগামী দলে তাঁকে দেখা গিয়েছিল, ডেনিম-পতাকা
পাপারাৎজিগন তাঁকে লিপ্সটিকঠুঁটো হাফনগ্ন ফিল্ল্মিনারীর
কোলে আঙুর খাইতে দেখিয়াছে, কালো আর সবুজাভ
কতো কতো কোলাহল সহ্য করিয়াছে অবন্তিকা
নিরুদ্দেশ পিতার উদ্দেশে
পাড়াপ্রতিবেশীদের মুখগুলি চিরতরে বন্ধ করিবার জন্য
অবন্তিকা গয়ায় শ্রাদ্ধশান্তি করিয়াছে
কহিয়াছে যাইতে দিন, অমন বাপের জন্য শ্রাদ্ধই যথেষ্ট
আমি বলি, যাহা হউক, উনি পিতা, জন্ম দিয়াছেন
আই মিন জন্ম দিতে ওনারও ভূমিকা ছিল
আমি ওর মাতুলালয়েতে যাই, মাউন্ট রোডে, বিশাল বাগানঘেরা
কুকুরের ঘেউ-ঘেউ মুখরিত, বারান্দায় যে বৃদ্ধ ইংরেজি
সংবাদপত্রে নাসিকা ঠেকাইয়া খবরের দুর্গন্ধ আহরণ করিতেছিলেন
তাঁহাকে আত্মপরিচয় দিই; তিনি, হাস্যমুখে আমার পিতা ও
পিতামহ কোথাকার, ঘটি না বাঙাল,
জানিবার পর, কহিলেন, ইলিশ খাই নাই কতোকাল,
জল পান করিবে কি ? স্টেনলেস স্টিলের গেলাসে আপত্তি নাই তো ?
আজকাল পিতলের যুগ নাই, আমাদের কালে ছিল, পুরাতন হইয়া গেলে
চারশো টাকায় কিলো, ব্যবহৃত স্টেনলেস  কেহই কেনে না
ব্যবহার করো আর ত্যাগ করে চলে যাও
কি যে ছিরি আজকালকার প্রেমে, একজন থেকে আরেকে
ছেড়ে যদি চলে গেলি, বোধিপ্রাপ্ত হলি ? বোধিপ্রাপ্ত হলি যদি
চেলা সংগ্রহ করে মঠ খুলে নিজের মূর্তি বসালি ?
বৃদ্ধকে আমি বলি, বিবাহ প্রস্তাব লইয়া আসিয়াছি
সে বিষয়ে আলাপ করিতে চাই, উনি জিজ্ঞাসেন, মাঠেতে বসিয়া
চিনাবাদাম খাইয়াছ ? সিনেমা দেখিয়াছ দুইজনে ? রেস্তরাঁয়
হাসাহাসি করিয়াছ ? কফিহাউসে লইয়া গিয়াছিলে ?
অবন্তিকার মামা দুই হাতে চেনে বাঁধা দুইটি কুকুর সহ
ঠোঁটে চুরুটের ধোঁয়া, প্রবেশ করিয়া বলিলেন,
ও তুমিই বিবাহপ্রার্থী ! শুনিয়াছি, ভালোই রোজগারপাতি ;
অভিভাককে বলি, রোয়াব প্রদর্শন করিব বলিয়া
ইংরেজিতে বলি, আপনার ভাগ্নিকে আমি বিবাহ করিব
অবন্তিকার মায়ের মধ্যম ভাই জিজ্ঞাসা করেন
ভাগ্নি ? কোন ভাগ্নির কথা বলিতেছ ?
যাহাকে আমরা দিব অথবা যাহাকে চয়ন করিয়াছ তুমি নিজে !
মনে মনে দুই-চমক ভাবি, অন্যগণকে দেখিয়া লইব নাকি
কে বেশি সুন্দরী ? মাতুল জানিতে চান, প্রেম করিতে্ছ ?
না না না না, প্রেমে পড়িবার আগে বিবাহ সারিয়া লইতে চাই
অযথা সময় নষ্ট করিতে চাহি না
হাহা-হিহি, চিনাবাদাম, চিংড়ি কাটলেট, ময়দানে পা ব্যথা,
ভিক্টোরিয়ায় গিয়ে ছাতার আড়ালে চুমু খাওয়া
ওসব চাই না আমি, জাস্ট বিয়ে করে ফেলতে চাই
দুজনে দুরকম চিন্তার আগে । মাতুল কহেন, রাইফেল কখনও
চালাইয়া পরখ করিয়াছ, এই দ্যাখো, আমার রাইফেল-স্টক
বুলেট, প্রোজেকটাইল, যা চাই চালিয়ে দেখতে পারো
কই দেখি, ওই উড়ন্ত পায়রাগুলির মাঝে একটাকে মারো দেখি ।
রাইফেল লইয়া আমি দুই চোখ বন্ধ করিয়া
ট্রিগার টিপিলাম । কী ফল হইল জানি না, উনি বলিলেন
গুড, ওয়েল ডান, মা-বাবাকে টেলিফোন করে দাও
আগামী সপ্তাহে বরযাত্রীসহ চলে এসো ।
বিবাহসভায় দেখিলাম, জনৈক ভিখারি, বুঝিলাম
বোধিপ্রাপ্ত ইনি, বলিলেন, আমি অবন্তিকার বাবা
তোমাকে আশীর্বাদ করিতে আসিয়াছি
বিগত কয়েকদিন তোমার উপরে নজর রাখিয়া
বুঝিয়াছি উপযুক্ত পাত্র তুমি
সত্যকার যেদিন মরিব সেদিন খবর পাইবে
সেইদিন আরেকবার শ্রাদ্ধ করিও, হ্যাঁ, আরেকবার
অগুস্তো পিনোশের দেশ হইতে অথবা পলপটের মাটি ফুঁড়ে
সমুদ্রের তলদেশ থেকে, স্পার্টাকাসের দল থেকে
নানা সাহেবের দল থেকে, ফিরিয়া আসিব.....









   

অবন্তিকার কমপ্লেকসেটি

অবন্তিকার কমপ্লেকসিটি
শ, যে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, অবন্তিকার  প্রেমিক নং ১, ইংলিশ
          মিডিয়াম স্কুলে পড়বার সময়ে ওর সঙ্গে ইংরেজিতে
          প্রেম করতো ।
শ-এর বাবা জ ( দুই ) ফরাসিদেশ থেকে হটেনটট ভেনাসের যোনি
          কিনে এনেছিলেন ( কথিত আছে )।
জ ( এক ) যিনি অবন্তিকার মেশোমশায়, তা জানতে পারেন, শ-এর
          বাড়ি যেতে বারণ করে দ্যান।
অলোকনন্দা গোস্বামী দোলের দিন রঙ খেলতে চায়নি বলে শিফন
          শাড়ি পরেছিল।
অবন্তিকার খুব ঈর্ষা হল, শিফন শাড়ি দিয়ে অলোকনন্দার মাইয়ের
           খাঁজ দেখা যাচ্ছিল ।
জ ( দুই ) নামকরা পেইনটার, উনি কেবল যুবতীদের খাঁজ আঁকেন,
           কলকাতার কালবৈশাখিতে অনেকের খাঁজে জল চুয়েছিল
অবন্তিকার মনে হতো প্রেম কেবল মাতৃভাষায় সম্ভব, একদিন  
          অ্যানাইস নিনকে লেখা হেনরি মিলারের চিঠি পড়ে বুঝতে
          পারলো যে শ বই থেকে টুকলিফাই করেছিল ।
ক্লাসটিচার সিসটার ব ( এক ) আয়ারল্যাণ্ডে ফিরে গেলেন, তাঁর
          বদলি টিচার কেরালার, সিসটার আইয়াক্কম ।
জ ( দুই ) কেরালার টিচারকে বাইবেল উপহার দিলেন, যাতে কালচে
         খাঁজ আঁকতে পারেন ।
অবন্তিকা ২নং প্রেমিক খ ( তিন ) এর দিকে ঝুঁকলো, কেননা
          সে স্কুলে বাংলায় প্রথম হতো আর অবন্তিকার মেসোর
          ওপন হার্ট সার্জারির খরচ দিয়েছে।
প্রতিদান হিসেবে অবন্তিকা খ ( তিন ) কে ব্লাউজে হাত ঢুকিয়ে
          টিপতে অনুমতি দিয়েছিল ( আহা কী আনন্দ )।
মিস্টার শৈলেন বোস মারা গেছেন । মিস্টার অজিত গাঙ্গুলিও।
         অবন্তিকা ওনাদের নাম শোনেনি ।                          
দ ( দুই ) এর দপতরে শ চাকরি করতে গেল ; খ ( তিন )
          ইটালির একজন ছাত্রীর সঙ্গে চলে গেল বিদেশে ।
প্রেম সম্পর্কে অনির্বাণের কোনো ধারণা গড়ে ওঠার আগেই র-নামের
          স্কুল থেকে সে দ-নামের কলেজে ভর্তি হবার পর অবন্তিকা
          যাকে সবাই অবু বলে ডাকতো, পরিচয়ের প্রথম দিনেই বললে
          আমি ডেটিং-ফেটিং করি না।
অনির্বাণ, যে জ ( দুই ) এর জারজ ছেলে, উত্তরে বলেছিল, আমিও
          ফাকিং-সাকিং করি না । বেচারা ন্যাড়া বোষ্টম হয়ে গেল।
“মেয়েদের মাসিক প্রকাশ করা উচিত নয়”, সাইনবোর্ডে লেখা, তলায়
          পেইনটিঙ, জিনস-পরা যুবতীর মাসিক হবার রক্ত লেগে।
           পত্রিকার নাম ‘আরেত্তেরি ইস কি মা কা আঁখ’ ।
পড়ার পর অবন্তিকা নিজের পাছায় হাত দিয়ে চেক করে নিল। নেই।
          যুবতী সাইনবোর্ড থেকে নেমে জিগ্যেস করল, পাতা ফুঁকবে?
মইনুদ্দিন খানের কাঁধে হাত রেখে জ ( এক ) নির্বাচনে কজন মারা
          গেছে তা আলোচনা করতে-করতে গেল।
কালবৈশাখির মেঘ একটু একটু করে জমা হচ্ছে, ছাতা আনেননি
          কেরালার টিচার, ওনার খাঁজ অতিপবিত্র, দেখানো যাবে না
          বৃষ্টির জল তা মানতে বাধ্য নয় ।
শ একদিন জানতে পারলো তার বাবা জ ( দুই ) যাকে হটেনটট
          ভেনাসের যোনি বলে সকলকে ঈর্ষায় পুড়িয়েছেন তা আসলে
          ফরম্যালিনে চোবানো বড়ো বাদুড়
খবরের কাগজে সংবাদটা পড়ে ম, যার সঙ্গে স্নাতকোত্তর পড়ার সময়ে
          অবন্তিকার পরিচয় হবে, নিজেকে বলেছিল কি লজ্জা কি লজ্জা
          মরা বাদুড় দেখেও লিঙ্গোথ্থান হয় ।
অনির্বাণ বোষ্টম হয়ে এক সুন্দরী বোষ্টমীকে ফাঁসিয়েছে, কী কুক্ষণে যে
          লটারির টিকিট কিনেছিল দশ লক্ষ টাকা পেয়ে চুল গজালো।
অবন্তিকা একদিন ম-কে কাফে কফি ডে-তে বললে যে ওর একটা মাই
          কেউ এখনও টেপেনি ।
ম বলেছিল, চিন্তা করিসনি, আমি টিপে দেবো । ম এমনই চরিত্রহীন যে
          তার আগেই শ-এর খুড়তুতো বোনের মাই টেপার অফারের
          সদ্ব্যাবহার করে ফেলল।
খবরের কাগজের উত্তর সম্পাদকীয়তে হটেনটট ভেনাসের আসল যোনি
          আর জ ( দুই )-এর বাদুড় যোনির তুলনা প্রকাশিত হলো।
পেইনটিঙের সমালোচকরা আবিষ্কার করলেন জ ( দুই ) এর খাঁজের
          তেলরঙগুলো আসলে বাদুড়দের ছবি ।
ম একদিন অবন্তিকাকে প্রস্তাব দিল যে পূর্ণিমার রাতে সেন্ট্রাল পার্কের
          ঘাসে ফুলশয্যা করা যাক ।
ম-এর মা ট ( দশ ) পার্কে সঙ্গমরত দুজন মানুষকে ভাবলেন ভুত আর
          ভুতনির অষ্টাঙ্গদশা, দেখেই দুহাত তুলে দৌড়োলেন ।
ম-এর বড়ো ভাই প ( এক ) মাকে দৌড়ে আসতে দেখে সাপ মারার
          লাঠি নিয়ে পার্কে ছোটোভাইকে দেখে চটে গেলেন।
ম-এর মা ট ( দশ ) বড়ো ভাই প ( এক ) কে স্তোক দিলেন যে তোকে
          তিনচারটে মেয়ের সঙ্গে একই দিনে বিয়ে দেবো।
ট ( দশ ) এর ছোটোবোন ট ( নয় ) যে জ ( এক )-এর ডিভোর্সি বউ
          তা কেবল অবন্তিকা আর ম জানতো।
ট ( নয় ) ম-কে বললেন, ঘাসে লীলেখেলা করিস কেন রে, হাঁটু ছড়ে
          যাবে, আমার বাড়ির ব্যবহার-না-করা বিছানা তো ছিলই।
ট ( নয় ) এর ব্যবহার-না-করা বিছানায় লিলেখেলা করার সময়ে ম-কে
         অবন্তিকা বললে, তুমি আমার প্রেমিক নং ১৮ ।
ম অবাক হলো যে এর আগে সতেরোজন প্রেমিক কি বিছানার চাদরে
         রক্ত মাখাতে পারেনি !
অবন্তিকা ম-কে জানালো যে জ ( এক ) যিনি ওর মেসোমশায় তিনি
         এই শহরের ভার্জিনিটি রিপেয়ার বিশেষজ্ঞ ।
শ, যে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, জ ( এক )-এর ভার্জিনিটি রিপেয়ারের
         হিসেব রাখে, তার কাছ থেকে ম জানতে পারলো যে এই শহরের
         প্রতিটি ভার্জিনের ভার্জিনিটি রিপেয়ার করা ।
জ (এক ) আর জ ( দুই ) দুজনেই তাঁদের স্হাবর-অস্হাবর সম্পত্তি ম
         আর অবন্তিকাকে লিখে দিয়ে গেছেন ।
ম আর অবন্তিকা ছেলে মেয়ে বউ জামাই নাতি নাতনি নিয়ে এখন সুখে
         থাকার চেষ্টা করে অথচ পারে না ।
         
         

























সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০

মৃত্যু - একটি আভাঁ গার্দ কবিতা

মৃত্যু - একটি আভাঁ গার্দ কবিতা
মৃত্যু কি ক্রিয়া ?
মৃত্যু কি ক্রিয়াপদ ?
মৃত্যু কি বর্তমানকাল ?
মৃত্যু কি অতীতকাল ?
মৃত্যু কি বিশেষণ ?
মৃত্যু কি বিশেষ্য ?
মৃত্যুর সংজ্ঞা আছে ?
মৃত্যুর মুহূর্তই কি মৃত্যু ?
মস্তিষ্কের মৃত্যুই কি মৃত্যু ?
হৃৎপিণ্ডের মৃত্যুই কি মৃত্যু ?
উত্তর রয়েছে প্রতিটি মৃতের কাছে !

শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০

কমরেড পু-এর আত্মহত্যা - একটি পোস্টমডার্ন কবিতা

উৎসর্গ : মারুফুল আলম
কমরেড পু, ম-১ এর খুড়তুতো বোন, গলায় দড়ি বেঁধে, ঝুলে পড়ল ।
         পুলিশের ডাক্তার ট-১ জানিয়েছিল, যুবতীটি মারা গেছেন
রাত ১টা ৪০শে, তাহলে পু ওর আত্মহত্যার কবিতায়, তারিখের তলায়
         কেন সময় লিখেছে রাত ৩টে ৩০ ?
কবিতাটা থানা থেকে পাওয়া যায়নি, ইন্সপেক্টর জ-৩ বললেন,
         সনেটে লেখা আত্মহত্যার চিরকুট ফেরত দেয়া নিষেধ ।
এফ আই আর-এ লেখা ছিল, "চাঁদ ওঠে নাই, বাতাস বহিয়াছিল, শৃগালিনী
         পুংশৃগালকে ডাকিতেছিল, ইহা শরৎকাল, ৩০০ বছরের পুরানো ইঁট,
         বরগার চিড়ের কারণে চড়াইপাখির ডিম পড়িয়া ফাটিয়া গিয়াছে,
         পুংচড়াই নালিশ করিতেছিল, নথিবদ্ধ করা হইয়াছে ।"
কমরেড পু, যে ম-১ এর কাকা ন-২ এর মেয়ে, কেন আত্মহত্যা করল
         তা কবিতায় লেখেনি । পু সোভিয়েত রাষ্ট্রে যেতে চায়নি ।
         পু মনে করতো, রুবলহারামিরা নবযুগ আনতে পারবে না,
         নিজের, ছেলেমেয়ের, জ্ঞাতিগুষ্টির নবযুগ আনবে বটে,
         বাড়ি, গাড়ি, নার্সিং হোম, প্রায়ভেট স্কুল খুলে ফেলবে ।
         ম-১কে লিখে বলেছে, "ছোড়দা, ছন্দে ভুল থাকলে শুধরে দিও।"
ম-১ তো নিজেই কোনো জন্মে সনেট লেখেনি, মনে-মনে ছকে রেখেছিল,
         কখনও আত্মহত্যা করলে, নাটকের আঙ্গিকে চিরকুট লিখবে,
কেননা ম-১ এর আত্মহত্যা করার বহু কারণ জীবনে ঘটে থাকলেও,
         কাজটা ম-১ মুলতুবি রেখেছে, ম-১ এর জীবনে খলনায়ক
         সংখ্যায় বড়ো বেশি, যেমন স-২, স-৩, স-৪, শ-১, শ-২ ।
কমরেড পু-এর আত্মহত্যার কোনো কারণ ছিল না । এই ব্যাপারটাই
         ভালো লাগে ম-১ এর, আত্মহত্যার কারণ না থাকলেও
         আত্মহত্যার ইচ্ছে । পু টাকাহারামিদেরও বিশ্বাস করতে পারেনি ।
         বলতো, "আমাদের আদর্শকে গুয়ের সমুদ্রে চুবিয়ে দেবে ।"
ইচ্ছেকে ক্রিয়ায় পালটে ফেলার আহ্লাদটাই কমরেড পু-এর
         আত্মহত্যার কারণ হতে পারে ।
পু যে নিৎশে, কাফকা, ভারতচন্দ্র, ঋত্বিক পড়তো, তা ম-১ জানে,
         'রসমঞ্জরী' পড়ে জানতে চাইতো ও কোন ধরণের যুবতী ।
পু আত্মহত্যা করার পর, বড়োঘরের বরগা, যা থেকে পু ঝুলেছিল,
         ভেঙে পুরোবাড়ি ধ্বসে পড়ল যখন, পু-এর আত্মহত্যা
         গুরুত্ব হারিয়ে হয়ে গেল বসতবাড়ির আত্মহত্যা ।
ম-১ এর ঠাকুমা অ বললেন, "ওই ঘর ছিল অভিশপ্ত, তোদের বংশের অনেক
         লম্পট পুরুষ বাইজির মদে মেশানো বিষ খেয়ে মরেছে ;
তা হত্যা ছিল না আত্মহত্যা না অতিযৌনতার প্রতিদ্বন্দ্বিতা, আজও
         জানা যায়নি।"
ঠাকুমা অ বলে উঠেছিলেন, "ছি ছি রসমঞ্জরী ! কোন মেয়ের চুল নেই
         কোন মেয়ের কম চুল, কোন মেয়ের চুলে চুল ! ওই চুলের খোঁজেই
বংশের পুরুষগুলো মাগিদের কোঁচড়ে মুখ গুঁজে মরল । তোরা মাগিদের নিয়ে
        র‌্যালা করলে বেপাড়ায় গিয়ে করিস, সেখানকার মাগিরা
        চুল রাখে না বলে শুনিচি ।"
ম-১ এর দাদা স-১ জানতে চেয়েছিল, "এই অভিশপ্ত ব্যাপারটা কী গো?"
         ঠাকুমা অ বলেছিলেন, "ওসব আমাদের কালের ব্যাপার,
         বজরা ভাসতো, ঝাড়লন্ঠনের রোশনাই ঝিকমিক, ঘুঙুর,
         চিকের আড়াল, রুপোর রেকাবি, বিলিতি মদ, মুজরো।"
ঠাকুমার পরামর্শে ম-১ আর তার দাদা স-১ যৌবনে অনেক মাগিবাজি
         করেছিল । তরুণী গবেষকরা তা লিখে রেখেছেন ।
পু তা জানতে পারেনি, ভাগ্যিস । নয়তো এই নিমকলঙ্ককেই ওর
         আত্মহত্যার কারণ বলে শিলমোহর দিতো ।
সেই থেকে চিরকুটহীন আত্মহত্যা ম-১ এর পছন্দ । সনেটের বদলে
         পু ওয়াটার কালার এঁকে যেতে পারতো ।
ফ্রেমে আত্মহত্যা বাঁধিয়ে রাখতো ম-১ এর কাকা ন-২, আর পু-এর নিজের
         দুই বেয়াড়া ভাই জ আর ম-২ ।
আত্মহত্যার কোনো কারণ থাকা উচিত নয় । কেন ক-এর জন্য খ,
         খ-এর জন্য গ, গ-এর জন্য ঘ, ঘ-এর জন্য ঙ, ঙ-এর জন্য
আত্মহত্যা করার কারণের মানে হয় না কোনো । আত্মহত্যা করার হলে
         উঠে দাঁড়াও, বিষ খাও, সন্ধ্যার নদীতে গিয়ে ডুব দাও,
         আকাশ তোমাকে দেখুক চুল এলিয়ে সাগরের দিকে ভেসে চলেছ ।

রবিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২০

চীনা মেয়ে


"চীনা মেয়ে"
বাদুড়খাকি চীনা মেয়ের ঠোঁটেতে তুই চুমু খাবি ?
ওই মেয়ে তো কুকুর বেড়াল ঢোঁড়া সাপের মাংসখাকি !
প্যাঙ্গোলিনের আঁশের গুঁড়োয় চাগিয়ে তোলে অরগ্যাজম !
জেনেশুনে তার ঠোঁটে তুই চুমু খাবি ?
খাবো খাবো খাবো । বুকের হলুদ-লালচে বোঁটায় টুসকি দেবো ।
.
ওর দাদু যে মাও-জে দঙের লম্বা লাফে শামিল ছিল ।
মাওয়ের মতন ওর দাদুরও গোটাকতক রাখেল ছিল ।
বাবা তো ওর সাম্যবাদী দলের নেতা, অঢেল পুঁজি ।
খাবো খাবো খাবো । স্বাদু ঠোঁটে কামড় দিয়ে চিপকে যাবো ।
অরগ্যাজমের জোয়ার-রসে যা-হবার-তা-হোকগে বলে চুসকি দেবো ।