মলয় রায়চৌধুরী

মলয় রায়চৌধুরী

বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

বজ্জাতির জন্য প্রেমের কবিতা

রক্ত তৈরি হচ্ছে তোর দেহে
শুনতে মাই মিহিন আওয়াজ
সাহিত্যিক ক্রিমিনাল আমি
ইচ্ছামতো শব্দদের ভাঙি
প্রথম চুমুর স্মৃতি আছে
প্রজাপতি উড়েছিল পেটে
কার শবে সুগন্ধ ছিল বল
র‌্যাঁবো না রবিঠাকুরের
যতো শিগ্গিরি পারি মানেদের
মুছে ফেলে অন্য মানে দিই
ব্যকরণ এমন শয়তান
অথচ মূর্ছা যায় আমি ছুঁলে
ব্যাখ্যাদের তুলে নিয়ে গিয়ে
ধাপার জঞ্জালে ফেলে দিই
মর্ত্য যে যক্ষ্মায় ভুগছে
পালাবার পথ বাকি নেই
শৈষ্ঠ দুঃস্বপ্ন সুসৃজন
কবিতা খোঁচাতে জানে ডোম
ক্যালেণ্ডারে কবে ঢুকবে ভেবে
মধ্যবিত্ত হিমশিম খাক
পয়লা জানুয়ারি থেকে বৈশাখ
জন্মমৃত্যুর মাঝে ডুবে
মজার ব্যাপার হলো এই
আমরা মানুষ এখনও
হায় নরহত্যার অভিলাষ
সকলে মেটাতে পারে কই
এরা বলে আমি ফেরাউন
ওরা ডাকে আমি মালাউন
আমার নির্দিষ্ট বাড়ি নেই
শহর থেকে শহরে বেড়াই
রক্ত তোর তৈরি হচ্ছে দেহে
তাতে শ্রম পুরোটা আমার

সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

ন্যাংটো তন্বীর জন্য প্রেমের কবিতা

কুচকুচে চকচকে পুংঘোড়ায় বসে আছো ন্যাংটো তন্বী
তোমার কুলকুচি-সুধা খেয়ে পৃথিবীর নেশা ধরে গেছে
তার ফল এদান্তি ফলছে রসেবশে ধোঁয়ায় কান্নায়
চুলেতে রঙিন-ফুল গুঁজেছিলে বিপ্লবী শতকে
তাই থেকে শুরু হলো দেংজিয়াও পিঙ্গের বিড়ালের রঙ
মারামারি ঠোকাঠুকি শেষে সেই টাকমাথা পুরুষ ময়না
মাওবাদী বনপ্রান্তে কুঞ্জমাঝে খসখসে হেঁকে গায়
চুলে গিঁট পড়ে গেলে কোনো চিন্তা নেই
স্বর্গ-নরক-মর্ত্য সর্বত্র চিরুনি আছে
চিরুনি-তল্লাশ আছে, এক পা সামনে আর দুই পা পেছনে
সেই গ্রেট লাফ দিয়ে সামনে আঁৎকে দেখলে চারিদিকে রক্ত কেবল
শুধু তোরা দুচোখের পাতা রাংঝালে জুড়ে চলে যাস
সাংস্কৃতিক বিপ্লবে আনন্দিত লোকগুলো আজ বুড়ো-বুড়ি
অবশ্য অনেকে দুর্ভিক্ষে মরে গেছে, মাটির তলায় হাড়
শেষে কিনা বিপ্লবের জায়গায় প্রতিবিপ্লব !
কুচকুচে চকচকে পুংঘোড়া হাঁকিয়ে ন্যাংটো তন্বী তুমি
দুর্বিপাক ডেকে আনলে ঝুলে-পড়া গোলার্ধ দুটোয়
জুজুবুড়ি জুজুবুড়ো খোকোন খুকুরানি তটস্হ সক্কলে...

মঙ্গলবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০১৬

কঙ্কালের দেশের জন্য প্রেমের কবিতা

ভেঙে-ভেঙে পড়ছে শহরের রাস্তায় পথে গলিতে ঝুরোঝুরো কঙ্কাল
অপেক্ষা করছি তারা ঘুরে দাঁড়িয়ে এবার আমার সঙ্গে নাচবে
আমি তাদের মাংস-মজ্জা-রক্ত-চামড়া খেয়ে কঙ্কালের নান্দনিকতা দিয়েছি
সাপের ফণা দিয়ে দেশের ইতিহাস লেখার পর এই কঙ্কালগুলোকে
তাদের চেহারা ফিরিয়ে দেবো কিন্তু কোনোটাই মানুষের কঙ্কাল হয়ে উঠবে না
বহুকাল আগে মানুষরা থাকতো এই দেশে তারাই এখন জানোয়ারের কঙ্কাল
সবাই চাইছে তাদের শুকতারায় নিয়ে গিয়ে দাহ করা হোক
শিস দিই ছুটে আসে রক্তমাখা বাদামি নেকড়ের দল
সাপেদের মুখ থেকে গলগল করে কুচকুচে রক্ত বেরোয়
সাপেদের দাঁত থেকে ফিনকি দিয়ে নীল বিষ ছিটকে ভেজায় কঙ্কালদের
আমি বিষ খাই বিষ খাই বিষ খাই দীর্ঘ হয়ে উঠি
আকাশে মাথা ধাক্কা খেলে বুঝতে পারি উড়ছে অন্ধ পেঁচারা
আমার চোখ লক্ষ্য করে কঙ্কালরা হাড়ের স্লোগান আওড়ায়
চারিদিকে মানুষীদের জরায়ু পড়ে আছে বিষে নীল
নেকড়েরা তবুও জরায়ু টানাটানি করে চলেছে
আমি দীর্ঘ হতে থাকি দীর্ঘ হতে থাকি দীর্ঘ হতে থাকি
বিষ আমাকে এতো ক্ষমতা দেবে তা তোমরা জানতে না
তোমরা মানুষ ছিলে এককালে এখন জানোয়ারের কঙ্কাল হয়ে গেছো

কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টোর প্রেমের কবিতা

রক্ত খেতে শেখানো হয়েছিল তাই রক্তকে টনিক মনে করে খেয়ে চলেছি
মানুষের কালো রক্ত গোরুর সবুজ রক্ত বাঘের নীল রক্ত
যতো রক্ত আকাশ থেকে চুয়ে-চুয়ে পড়েছে আর বয়েছে নদীগুলোয়
সবই আমার খাওয়া
খেয়ে হেগে বের কে দিয়েছি ওদের
রক্তগুলো গুয়ের সোনালি রঙের ছিল না
ছিল কালো সবুজ নীল কমলা বেগুনি হলুদ
সেগুলো কেউটে হয়ে আমার পড়ার টেবিল ঘিরে সারা দিন নাচে
বলে, রক্ত খাও রক্ত খাও রক্ত খাও
নয়তো সব নদী-নর্দমা শুকিয়ে যাবে
লোকেরা লাশ ভাসাতে পারবে না
চাষ করে গাছে-গাছে মুণ্ডু-ফসল ফলাতে পারবে না
স্যানিটারি ন্যাপকিন কনডোম শিকনি ফেলতে পারবে না
রক্ত খেতে শেখাবার সময়ে ওরা বলেছিল, যাও
গন্ধমাদন তুষারে কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টো নামে আয়ুর্বেদিক পৌধা আছে
রক্ত খেতে-খেতে ল্যাজের কেতন উড়িয়ে আমি পৌঁছোলুম
গন্ধমাদন গ্লেসিয়ারে দেখলুম কমিউনিস্ট ম্যানিফেস্টোর নাম পালটে গেছে
ভেতরের লেখাগুলো পালটে তার নাম হয়ে গেছে মনুস্মৃতি
বইটা খুলতেই রুশ ভাষার অক্ষরগুলো ঝরে পড়তে লাগলো
বরফের আগ্নেয়গিরি থেকে বেরিয়ে চেঁচাতে লাগলো
ফিরে গিয়ে যাকে পাবি তার রক্ত চেটেপুটে খাবি
তাছাড়া নদী-নর্দমা শুকিয়ে যাচ্ছে, মানুষ বিষাক্ত পৌধা হয়ে যাচ্ছে
আমি রক্ত খেয়ে খেয়ে খেয়ে খেয়ে খেয়ে খেয়ে বাঁচতে শিখে গেছি
যেদিকে তাকাই পৌধার পর পৌধামানুষের মুণ্ডু হাসাহাসি করছে

সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬

শাশুড়ির জন্য প্রেমের কবিতা

বাঁশদ্রোণী বাজারে শাশুড়িদের ভিড়ের ভেতর হাঁটতে-হাঁটতে আমি
আমার শাশুড়িহীন জীবনের অভাব মেটাবার চেষ্টায়
ভারি-ভরকম এক শাশুড়িকে বলি, দিন থলেটা, পৌঁছে দিচ্ছি--
উনি বলেন, না, আমার ড্রাইভার আছে
একজন শাশুড়ির কাছে কি তাহলে ড্রাইভারের গুরুত্ব বেশি !
বোঝা উচিত ছিল, কেননা ওনার শাড়ি থেকে 
বিদেশি পারফিউমের সুগন্ধ পাচ্ছিলুম
আরেকজন শাশুড়ির কাছে গিয়ে জামাইষষ্ঠীর দিনের অভাব মেটাবার জন্য
কিছু বলার আগেই উনি বলে ওঠেন
ও বাবা একটু মাছটা টাটকা কিনা দেখে দাও তো
আমার জামাই চিতল মুইঠা খেতে ভালোবাসে
শাশুড়ি ছিল না বলে চিতল মুইঠা খাইনি কখনও
তবু বলি, চিতল এরকমই হয়, তেমন টাটকা তো পাবেন না
জামাইষষ্ঠীর বাজারে এসে আজ মনে হচ্ছে পুরো জগতটাই
শাশুড়িময়, শুধু আমার ভাগ্যেই শাশুড়ি জুটলো না
জানতে পারলুম না জামাইষষ্ঠীতে জামাইদের ভূমিকা কি
শাশুড়িরা সেদিন জামাইদের নিজের মেয়ের চেয়ে বেশি আদর করেন নাকি
কেমনভাবে কি-কি করেন ধুতি-পাঞ্জাবিতে হিরো জামাইকে নিয়ে
আমার শাশুড়ি থাকলে আমি তাঁকে প্রণাম করবার জন্য
ঠোঁটে একটা চুমু খেতুম
উনি আমায় জড়িয়ে ধরে সকলের সামনে আদর করতেন
আমি ওনাকে সালমান খানের ফিল্ম দেখাতে নিয়ে যেতুম
ম্যাকডোনাল্ড কে এফ সি ডোমিনোজ পিৎজায় নিয়ে যেতুম
ব্ল্যাক ফরেস্ট আইসক্রিম খাওয়াতুম
সারা বাঁশদ্রোণী বাজার আজ ছেয়ে গেছে শাশুড়িতে
এনাদের অনেকের ঠোঁটেই চুমু খাওয়া যায়
ভিড়ের ভেতরে আমি জামাইহীন শাশুড়ির খোঁজ করি
শেষে পেয়ে যাই একজনকে, উনি বলেন, ওনার ভাগ্য বড়ো খারাপ
মেয়েও হয়নি আর ছেলেও হয়নি, আর দ্যাখো, শাশুড়িগুলোর ঢঙ
আমি বলি, চলুন, তাহলে বাজার করে দিচ্ছি
আমারও শশুর নেই, শাশুড়িও নেই
কিন্তু আপনার ঠোঁটদুটো খুবই সুন্দর, এই বয়সেও মেইনটেন করেছেন
উনি বলেন, না করলে আর পথজামাইদের ধরব কেমন করে !

রবিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৬

আমি কাননদেবীরে বুঝি নাই, সুচিত্রা সেনরে বুঝি নাই

 Alfred Newton : "Poetry is a kind of ingenious nonsense."
বহুকিছু বুঝি নাই আমি, বহু লেখাজোখা, বহু আঁকজোক, নক্ষত্ররাজি
আমার গ্রন্হ যাঁহারা কোনোদিন হস্তে লন নাই, তাহাঁরাও
আমাকে পছন্দ কখনও করেন নাই এমনও দেখিয়াছি--
আমিও চাহি না তাহাঁদের পছন্দের তালিকায় আমার
কুনামখানি ঘাপটি মারিয়া থাকে, তাহাঁদের রোগগ্রস্ত করে--
জিজ্ঞাসা করিবার মতো কেহ নাই ; কেই বা বলিয়া দিবে
সাতাশ নক্ষত্র হতে কী কারণে একটি নক্ষত্রের নাম বাছিলেন
সেইটি চব্বিশতম, নক্ষত্রগণের ক্রীড়া কভূ বুঝি নাই
কাননদেবীরে বুঝি নাই, সুচিত্রা সেনরে বুঝি নাই
অহো, সে কি নক্ষত্রের আলো, তাহাঁদের বায়োস্কোপের
গবাক্ষগুলিতে তাহাঁদের জ্যোতি দেখিবার জন্য জনসমুদায়
কাড়াকাড়ি মারামারি করিতেছে, ক্রমে বৃদ্ধাবৃদ্ধ, তাহাঁদের পক্ককেশে
শেষ আলো কোথায় হারায়ে গেছে, তাহাঁরা কেহ কভূ
জানিতে পারেন নাই ; অহো, কেমনে একটি রকেট চাঁদে যায়
ফিরিয়া চলিয়া আসে পুনরায় ! কেহ কেহ রকেট বিজ্ঞানাশ্রিত কবিতায়
চুপিসাড়ে কোয়ান্টাম বাস্তবের ফাঁদখানি পাতিয়া অপেক্ষা করেন
যেমন বিষ্ণু দে, তাহাঁর পংক্তিগুলি রকেটগণিতে কেন যে আক্রান্ত
বুঝি নাই ; আমি যোগেন চৌধুরী বুঝিয়াছি, গাইতোণ্ডে বুঝি নাই--
কুড়ি কোটি টঙ্কায় তাহাঁর তৈলচিত্র বৈভবশালীগণ ক্রয়ের গৌরবে
নিজ-নিজ নাম টঙ্কাক্ষরে লিপিবদ্ধ করিবার ক্রীড়ায় মাতেন
অহো, অহো, আমি অলোকরঞ্জন বুঝিয়াছি, আলোক সরকার বুঝি নাই--
তিন দিনে এক পংক্তি লিখিবার পর, আরেক পংক্তি আঠাহীন
নিম্নের সিঁড়ির ধাপে স্হান লয় ; প্রথম পংক্তির ন্যায় সেটিও কবিতা--
বুঝি নাই প্রতিটি পংক্তি যদি কবিতার রূপ লয়
তাহারা কি বিচ্ছিন্ন সমাপতনের অষ্টমগর্ভের সন্তান--
মাধুরী দীক্ষিতের যেনবা কটিদেশ, আলিয়া ভাটের বেবি ঠোঁটের ফুলেল--
অমিয় চক্রবর্তীর কুহকবিহীন নিরাসক্ত হাহাকারহীন স্বপ্নহীন ঢঙে
অনুসরণের পথে দেখি আলোক সরকার; ছোটোলোকপাড়ার যুবা আমি
সদ্য দাড়ি গজাইবার আনন্দে হাত বুলাই, অচিন্ত্যনীয় চিন্তা করি--
"উতল নির্জন" হইলা কেমনে ! "নির্জন" তো জীবনানন্দীয়,
যাহাঁর কবিতার বিপুল ঝঞ্ঝা কৃষ্ণচশমায় করিয়াছিলেন রুদ্ধ ?
"আমার তো জানা নেই সহসা এ রঙ্গের প্রণয়" -- বুঝি নাই আমি --
"আমাকে তা দেওয়া কেন যা আমার নয়" -- বুঝি নাই আমি --
খ্রিস্টিয় ইংরাজগণ লইয়া আসিয়াছিল তাই, ফরাসি কবিতা বাংলায়
মধ্যবিত্ত বাঙালির আধুনিকতাবাদী ধুম্রজালে আলোক সরকার
পংক্তি ধরিবার জন্য নিবেশ করিয়াছেন চিত্রের অনৈক্যের খাতে
বয়সের সাথে-সাথে পংক্তিসমূহ পারস্পরিক জুয়া খেলিয়াছে
আধুনিকতাবাদী মহাআধুনিক কবিমহাশয়, গবাক্ষটি মালার্মের ছিল
অথবা সপ্তদশ শতকের ঝঁ লা ফনতা, উনিশ শতকে আলফসেঁ দ্য লামার্তিন
কেন কেহ আপনাকে ডাডাবাদী রাইজোম্যাটিক বলিবে না
পংক্তির পরের পংক্তির মাঝে আঠা নাই ! রজঃ বা বীর্যের আঠা ?
কখনো বা ঠাটা গদ্যে স্বগতসংলাপ কবির নামের ওজনে উঠে যায়
অতিসংহতির কূপে ইহাও কি "নিরাশাকরোজ্জ্বল চেতনার" ঢেউ নহে ?
আলোক-অলোক-দীপংকরের কন্ঠ শুনিয়াছি বালিগঞ্জের ধনীগৃহে--
শুনিয়াছি ঢেউগুলি স্ব স্ব দেহে সাবান মাখিবার পর ফেনাখেলা করে--
বাক্যগুলি অবজেকটিভ প্রতিস্ব লয়ে যাত্রা করে এবং সাবজেকটিভিটি
কাঁধের উপরে লয় "আলোকিত সমন্বয়" ; উহা কি প্রকৃতই সমন্বয় ছিল ? তাহাঁদের বঙ্গীয় চাহনিতে কলিকাতা নাই কেন ? বাস্তব কলিকাতা !
ঘরের বাহিরে চাহিয়া দ্যাখেন নাই আপনি ও আপনারা --
নিজ গৃহকোণকেই ঐতিহ্যপীড়িত "বিশুদ্ধ অরণ্য" রূপে মস্তিষ্কের কোষে
বোদল্যারি "শাণিত বিষাদ" নিপুণ বিন্যাসী বিলাসিতা পায়; অথচ শহর নাই
দেহের ভিতরে "দুই পাশে সবুজ ঘাসের স্বাভাবিক" । রিয়্যালি ? স্বাভাবিক ?
"কোনো পদচিহ্ণ নাই" ; আমরা যাহারা ছোটোলোক, দেখিতেছি
অজস্র মানুষ, হাজার লক্ষ পদচিহ্ণ প্রতিদিন প্রতিটি মুহূর্তে কোথায় হারায়ে যায়
এইসব মানুষের কোনোরূপ "আশ্রয়ের বহির্গৃহ" নাই ; আপনার আছে--
আপনাদিগের, আলোক-অলোক-দীপংকর মহাশয়দের.....

শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৬

আমি ক্ষুধার্ত থেকে যাবো


আলোচকদের জন্য প্রেমের কবিতা

যা ইচ্ছা লিখুন আপনারা, গালমন্দ, খিল্লি, খিস্তোনি
আমি চাই শুধু, ব্যাস, লেখা হোক, কিছু লেখা হোক
লিখে যান, আশ মেটান, কিছুটা কুখ্যাতির অংশ
বিলিয়ে তো যাই, নিন, নিন, হাত পাতুন, নতুবা মাথাটা
কলমে বা কমপিউটারে ঝেড়ে দিন সুযোগ পেলেই
আমি জানতে চাইব না, কে আপনার বাবা ছিল
কে ছিল পাথরে বীর্য থেকে জন্মানো দুর্বাসার কাগুজে বিদ্বান
পঞ্চাশ বছরের বেশি লিখে তো যাচ্ছেন
এখন আপনরা, তার আগে আপনার বাবারা মেসোরা
এভাবে চলুক যতো যুগ আপনারা চালিয়ে যাবেন
আরও পঞ্চাশ, আরও একশো, আরও কয়েকশো বছর
কবিতা যখন আপনার বংশে আর কেউ পড়বে না
তবুও আপনার বংশধরেরা আমাকে বাঁচিয়ে রাখবেন
খিস্তিয়ে, গালমন্দ করে, খিল্লি উড়িয়ে
ব্যাস, আমি চাই, চলতে থাকুক চলতে থাকুক চলতে থাকুক
জোকারপুঙ্গবদের রঙ্গতামাশা

ম্যাডেলিন করিয়েট-এর জন্য প্রেমের কবিতা

খামে-ভরা তোমার স্মৃতিটুকু ভাসানের জগঝম্প ভিড়ে 
জুহুর সমুদ্রের ঢেউয়ে শেষ চুমু খেয়ে 
বিসর্জন দিয়েলুম ম্যাডি, ম্যাডেলিন করিয়েট--
তিরিশ বছরের বেশি অফিসের কলিগেরা
খামের ভেতরের স্মৃতি দেখে, যা যা বলেছি ওনাদের
বিশ্বাস করেছে নির্দ্বিধায়, হা-হা, হা-হা, ম্যাডেলিন
বাঘিনীর লোম মনে করে হাতে নিয়ে গালে চেপে
মাথার ওপরে ভবিষ্যৎ উন্নত করবে বলে ঠেকিয়েছে
ভেবে দ্যাখো ম্যাডেলিন, কত্তোজনের সমাদর পেলো
গোলাপি তুলোট যোনি থেকে সংগ্রহ করা
সোনালি ঘুঙুরালি বালগুলো, জয় হোক, জয় হোক,
তোমার অক্লান্ত প্রেমের, নেশালগ্নে নিশিসঙ্গমের
সিংহের বাঘের টিকটিকি কুমিরের দৈব আঙ্গিকে

নারীর বুকের জন্য প্রেমের কবিতা

ম্যাডেলিন বলেছিল
প্রেমিকের শরীরের
সবকিছু মুখস্হ হয়ে গেলে
অন্য প্রেমিকের প্রয়োজন হয়
তারপর বুড়ো হলে জীবনের সব মিথ্যা
সত্য হয়ে উঁকি মারে বলিরেখা জুড়ে
প্রতিটি যুগের নিজস্ব মিথ্যা হয় 
সমস্ত জীবনভর যতো ছায়া মাটিতে ফেলেছ
তাদের একত্র করে প্রেমিকার বুকে মাথা গুঁজো
শেষতম নারী
দু'বুকের মাঝখানে ইনসমনিয়া সারাবার
ব্যবস্হা করবেই
সেখানে ঘুমের জন্মান্ধ উত্তমপুরুষ
কবিতার অদৃশ্য খাতা খুলে
কয়েক শতক বসে আছে