মলয় রায়চৌধুরী

মলয় রায়চৌধুরী

সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৮

জখম

চাদোয়ায় আগুন লাগিয়ে
তার নীচে শুয়ে আকাশের উরন্ত নীল দেখছি এখন
দু:খ কষ্টের শুনিনি মুলতুবি রেখে জেরা করে নিচ্ছি
হাতের রেখার ওপর দিয়ে গ্রামাফোনের পিন চালিয়ে জেনে নিচ্ছি
আমার ভবিষ্যত
বুকের বাদিকের আর্মেচার পুড়ে গেছে বহুকাল
এখন চোখ জ্বালা কোর্ছে মলয়ের কঙ্কাল জ্বালানোর ধোয়ায়
আশপাশ দিয়ে ঘন্টায় ৯৯ কিলোমিটার দরে উড়ে যাচ্ছে ঝড়
কব্জিতে ঘড়ির কাটা রেখে চলে যাচ্ছে
সারসার সদ্বিঠ্যাং মানুষের লাভলোকসানময় দল
১টা চামচিকে অনেক নিচু দিয়ে উড়ে আমাকে ভয় দেখাচ্ছে
ওদিকে ফাকা মাঠের মধ্যে সাজানো রয়েছে
হাট-কোরে খোলা ৮০০০০০ কাঠের দরোজা
আমার সামনে সমস্ত দৃশ্য ধেবড়ে গেছে দেখতে পাচ্ছি
কারুর সঙ্গে খাপ খাচ্ছে না আমার
আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে
১৬ ডিভিসন কাক আমার হাত পা ধড় ঘিরে চক্কোর কাটছে ২৫ বছর
হাড়ের রেলিঙ জাপ্টে দাড়িয়ে রয়েছে আমারি রক্ত মাংস
মলয়ের গায়ের চামড়া তুলে ফেলে
তার ঘাতঘোতের আত্মাভিমানী ফ্রেস্কো দেখতে পাচ্ছি
শরীরের ভিতর চোলছে আয়ুহীন অন্তর্ঘাতী কার্যকলাপ
হেমোগ্লোবিনে টহলদার আধারের উস্কানিমুলক কাজ চোলছে ফিমিনিট
এখন চুপচাপ ভেবে দেখছি আমাকে নিয়ে কি করা যায়
বংশপরস্পরায় পেয়েছি ৬০০০ বছরের পালিশ খাওয়া আপতকালীন ক্রুরতা
চামড়ার পুরনো পলেস্তরা চেছে মানুষের বোধহীনতা আমি ফেলে দিচ্ছি
ভাত খেয়ে আচাবার পর পরিষ্কার নখগুলোকে কেমন মহানুভব মনে হচ্ছে
আমার হারের ফাকফোকোরে গোত্তা মেরে উঠছে গরম গনগনে লু
আমার লাশ আগাগোড়া তল্লাশ কোরে হৃতপিন্ড না পেয়ে
মানুষেরা যে যার ঘরে ফিরে যাচ্ছে
মানুষই মানুষকে শেখাচ্ছে খুন আর সেবা করার কায়দা কানুন
শরীর থেকে পড়ে যাওয়া হাত পা তুলে লাগিয়ে নিয়ে ফিরে যেতে হয়
দুপুরের রালচে হাওয়ায় আমি দুচোখ বুঝে শুয়ে আছি
কাঁচা কয়লার গন্ধ ঘোঁট পাকিয়ে উঠছে দুঁদে অসংযমী শিরার ১৮ নং টোটায়
আমার বাবা-মা’র ক্রোমোজম
আমাকে আমার দিকহীন খপ্পরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে কিনা জানি না
ওফ্
ব্রেনের ক্রুদ্ধ শাঁসের ভাপ থেকে
রেটিনার উপর রঙিন নাইট্রো সেলুলোজ ঝরে পড়ছে
সমবেদনাজ্ঞাপক চিঠির আড়ত গড়ে উঠছে
আধভেজানো সদর দরোজার ভবিষ্যৎহীন চৌকাঠে
আখচার জং ধরে যাচ্ছে বহুব্যাবহৃত মাংসপেশীতে
মাটির সঙ্গে ১ যোগে গলে ঘাঁট হয়ে যাচ্ছে জ্ঞানী আর মূর্খের সমসত্য মড়া
গর্ভের ফ্যাচাঙে
১টা কোরে কনভার্সান চার্ট নিয়ে ওৎ পেতে রয়েছেন প্রতিটি নারী
আমার ১ই শিরার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে
গান্ধী আর আত্তিলার সমকেমিকাল রক্ত
কিছুই হল না আমার পৃথিবীরো খিছু হবে না শেষ ওব্দি
তেজারতি কর্বার করা হল না
হাওয়ায় ভাসমান গাছগাছালির বীজ
আমার অনুর্বর ঘামের উপর বসে ফ্যাঁকড়া ছড়াতে চাইছে
বুমঘাঙের আপেলবাগানে বসে ব্যর্থতার কথা ভেবেছি দুপুরে রোদ্দুরে
শয্যের শাঁসের হেঁসেলে ঢুকে-থাকা পোকার অলস আরামের খোঁজে
ছুটোছুটি করা হল না আমার
নিজের শরীরের ভেতরদিকেই আজকাল থুতু ফেলছি আমি
আয়নায় শঠ পারা থেকে খুঁটে তুলছি আমি
আমার হিংস্র চোখমুখের আত্মত্রাণকারী ছাপছোপ
সকলেই যে-যার কাজ গুছিয়ে ঘাটবাবুর সার্টিফিকেট নিতে চলে যাচ্ছে
আমারি মগজ থেকে বেরিয়ে
২০০০ শিকারী কুকুর আমাকে তাড়া কোরে ফির্ছে ২৫ বছর
স্ত্রীলোকদের পায়ে চলা রাস্তার গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে
আমি এগিয়ে যাচ্ছি তাদের আমেচার আস্তানার দিকে
অন্ধকার রাস্তার ওপর পায়ের শাদা ছাপ দেখে
আমার বুক ছাঁৎ কোরে উঠেছিল
দেওয়াল থেকে ঝুরঝুরে বালি খসে পড়ার শব্দে কাঁটা দিয়ে উঠতে চেয়েছে
আমার ম্লান চামড়া
লোমের চিমনিগুলো দিয়ে ঠেলাঠেলি মেরে বেরিয়ে যাচ্ছে
আমার সির্দাঁড়া পুড়ে যাওয়া ধোঁয়া
উইদের থুতু দিয়ে তৈরি মাটির শিরার মধ্য দিয়ে
কাঁচা মাংসের লাশ টেনে নিয়ে যাচ্ছে ডেঁয়ো পিঁপড়ের সার
গায়ে-পড়া ঢেউদের সামুদ্রিক পাড় দিয়ে
খালি-পায়ে আমি চলে যাচ্ছি শকুনদের বিমর্ষ আড্ডায়
আমি জেনেছি খাদ্যজিনিষের মধ্যেই ১ সঙ্গে লুকিয়ে থাকে
রক্ত আর পুঁজের আকালষেঁড়ে রং
আখের বিকারগ্রস্ত মেধা মাটি থেকে শুষে তোলে
তরল পরোপকারী নোংরামি
আমার নোংরামি আমার ভালোবাসা আমার রক্ত
মেঘের পাশে পাশে উড়ে যায় ফেলে-দেওয়া রক্তমাখা ন্যাকড়া
হৃৎযন্ত্রের আলতো কাঁপনে কেঁপে ওঠা
নীলা-র বাঁদিকে রুগ্ন স্তন আমার মনে পড়ছে এখন
মরবার দিন অব্দি মুখ বুজে জীবনের লাথানি সয়ে যেতে হয়
এখন আমার হৃদমেশিনের যায়গায় ঝুলছে ১টা জ্বলন্ত ম্যান্টল্
এখন আমার ধমনীদের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাচ্ছে
যোগবিযোগের চিহ্ন আর কাঁটা-ভাঙা কম্পাস
মাটির ভেতর সিসের মগজে ওৎ পেতে আছে
সংবাদপত্রিকাদের হ্যাঁ কিংবা না
আমি বুঝতে পার্ছিনা আমি স্বধর্মনিষ্ঠ কি না
আমার পা বুঝতে পার্ছেনা যে আমিই তাদের গতি আর দিক নিয়ন্ত্রণ কোর্ছি
অফেরৎযোগ্য নারী নিয়ে
আয়কর / শুল্ককর দিয়ে বুড়ো হয়ে যেতে হবে কি না জানি না
নিজের সই জ্বাল করে চালিয়ে দিলুম গোটা শীতকাল
চাইনি তবু জন্মালাম
জুতোর ফিতে না খুলেই
এবার আমি জোনাকিহীন অন্ধকারে লাফিয়ে পড়তে চাই
সকলেই কালকের জন্য তৈরি হয়ে নিচ্ছে
কালকের জন্যই আজ সন্ধেবেলা চোলছে জুতোর মমতায় পালিশ
ঘোরালো রাস্তা চলে যায় মানুষের পায়ের কাছ বরাবর ১ দিন না ১ দিন
দেবদারুর নতুন বাক্সে চড়ে অঙ্গ প্রত্যঙ্গের লোভে
দেশ বিদেশের সীমান্ত অব্দি চলে যায় গ্রিজমাখা ৩০৩ কার্তুজ
বৃদ্ধের ২৫১০ বছর পর গান্ধীময়দানে পড়ে থাকে
পুলিশ ও অপুলিশ মার্পিটের ১৯৬৫ মডেলের জুতোছাতা
কোকেন আর জাল টাকার আড়তে
দেদার আরামে ১ সঙ্গে শুয়ে থাকে ভারত আর চিনের নাগরিক
আমি অন্ধ ভিকিরির হাত থেকে ৫ পয়সার চাক্তি তুলে নিয়েছিলাম
আমি খইয়ের ভেতর থেকে কাড়াকাড়ি কোরে ছিনিয়ে নিয়েছি
মড়ার দয়ালু পয়সা
সাঁতার না-জেনেও নৌকোয় পার হয়ছি মরে যাবার ভয়
আমাকে ধিক্কার দেয়া যায় আমাকে উপেক্ষা করা যায় না
ঈশ্বর যন্ত্রস্থ
আমি ভুল গর্ভ থেকে নেবে ভুল নাম নিয়ে ঘুড়ে বেড়ালাম ৬৫টা বছর
ভুল ইচ্ছে থেকে পেয়েছি ভুল দ্বেষ
ভুল সুখ থেকে ভুল দুঃখ পেয়ে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল
আমি ভুল সংঘাত থেকে জড়ো কোরেছি ভুল চেতনা
আহ্ এ ভুল কোল্কাতা এ ভুল মানুষমানুষী
ভুল দম্ভ থেকে তৈরি কোরেছি ভুল হিংসে
আমি ভুল শৌচকাজ থেকে জেনেছি ভুল সরলতা
ভুল সংযম আমাকে এনে দিয়েছে ভুল বিরাগ
আমি ভুল অহংকার নিয়ে ভুল ভিড়ের কাছে চলে গেছি
আমি ভুল ভক্তি নিয়ে যে-কোনো কারুর খোঁজে জেগে বসে রইলুম সারারাত
ভুল স্বপ্ন দেখে ভুল জায়গায় স্ত্রীযন্ত্রের বদলে পেলুম অশ্বত্থের পাতা
ভুল শিক্ষা থেকে ভুল সুনাম পেয়ে কব্জির শিরা ছিঁড়ে ফেলে দিলুম
আমি ভুল নারীর পায়ের ওপরে রেখেছিলুম আমার নির্ভুল ভালোবাসা
ভুল প্রেম থেকে ভুল গন্ধের কাছে আমাকে অনেকবার চলে যেতে হল
আমি ভুল মদরুটি থেকে তৈরি কোরেছি আমার ভুল রক্তমাংস
ভুল সড়কের ওপরে দাঁড়িয়ে ভুল মত্লবের পাল্লায় ছিঁড়ে ছিঁড়ে ওড়চ্ছি
আমার ভুল ট্যানকরা চামড়া
নতুন চামড়া দেখব বলে আমি আমার ঘায়ের মামড়ি খুঁটে ফেলছি এখন
আস্তিনের তলায় আধপচা দগদগে ঘা লুকিয়ে
সকলের সঙ্গে হাত নেড়ে কথা বোলে যাচ্ছি
মুখের চামড়া নিচে আমার খুলি সব সময় হা কোরে হাসছে
আহ্
আঙ্গুলগুলো হৃদয়ের সঙ্গে সেলাই কোরে সিল কোরে রেখেছিলুম ২৫ বছর
আমি নদীর অযোগ্য জলে ডুবে গিয়েও ফিরে এসেছি কলের নিচে
মরামানুষের হতাশ জামাকাপড় পরে তারি খোঁজে ঘুরেছি রাস্তায় রাস্তায়
আমি অন্ধকারে কিছু একটা আকড়ে থাকার জন্যে চলে এলুম ২৫ বছর
অন্ধকারে নিজের সঙ্গে নিজে ধাক্কা খেয়ে আমাকে জাপ্টে র্ধোলুম
অন্ধকারে নিজেকে দেখে চমকে উঠলুম
ছাগল নাদির ঘুটেতে আগুন পোয়ালুম সারাটা চাকরিহীন মাঘমাস
মাসিক ২৮৭.৭৫ টাকা ভাড়ায়
আমাকে খাটিয়ে নিল জমিদারী নিলামের চোথাপত্তর
আমি খালি পেটে ইন্টারভ্যু দিতে গিয়ে বলে এলুম অর্থমন্ত্রীর কাকিমার নাম
ঢালু জায়গায় প্রস্রাব কোর্লে নিজেরি পায়ের দিকে স্রোত গড়িয়ে আসে
শরীরে এ.সি. আর ডি.সি. ২ রকম শিরার ব্যবহারই পুরোদস্তুর চালালুম
স্বপ্নে আমি নীল আমেরিকা থেকে ধূসর জর্ডন ওব্দি চালিয়ে ফেরাচ্ছি
আমার হাইফেন গোড়ালি
আঘাতের রক্ত খুঁজতে খুঁজতে ১৫০০ মাইল চলে যায় সহৃদয় বোরিক তুলো
এখন মলয়ের বেওয়ারিশ আশা আকাঙ্খা ফির্ছে
আমার হাড়হাভাতে কোলজের খাপখোপে
বিশ্বভাতৃত্ব শিখে এঁদো বস্তিতে ফিরে যাচ্ছে মানুষ
সফল মানুষদের লাংস থেকে আমি কার্বন রড টেনে বের কোরে আনছি
আমি গোলাপের পায়ের কাছে বসে দেখছি
কী কোরে তার কুঁড়ির ভেতর থেকে ফেটে বেরোয় ৩৪টা আলজিভ
একগাদা সবুজ কাচের টুকরো দেখছি চৈত্রের আতাগাছের ধুলোতে চামড়ায়
বিদেশি খনির সোরাগন্ধক এসে ফেটে পড়ছে ঝিকাবাড়ির মাঠময়দানে
আশেপাশের রাজ্য থেকে ৯৯০০০ পুরোনো জিভছোলা উড়ে এসে
কোল্কাতার আকাশ চষে ফলছে
গোখরোর মাথায় খুলে উঠছে জাপানি হাতপাখা আর মানুষের জীবন্ত পাঞ্জা
আমি লুকিয়ে-চুরিয়ে নিজের সমস্ত গতিবিধির ওপর লক্ষ রাখছি
গর্ভের ভেতরেই সকলে শিখে আসছে তাদের অপ্রাপ্ত জীবনের ১ম ডিগবাজি
আমার মুখ কান পায়ুকোটর দিয়ে
২৫ বছরের পুরোনো টাইমটেব্ লের ছেঁড়া পাতা বেরিয়ে আসছে
আদালতের অবমাননার দায়ে নিয়মের কাছে মাথা নোয়াচ্ছে ডারউইনের মানুষ
মরে যাবার আগে
ক্যাজুয়াল লিভ / অর্ডিনারি লিভ / সিক্ লিভ সম্পর্কে ভাবিত হচ্ছে মানুষমানুষী
খাবার সমেত হাত ঠিক উঠে আসছে মুখের কাছে
মহাজ্ঞানী রেডিও থেকে থুতুর ছাঁট আসছে এদিকে
উলটো শার্ট পরে আমি দেখাচ্ছি
সেলায়ের দাগ বগল আর কলারে বসে থাকা তেলচিটে ময়লা
চশ্মার কাচের ওপরে লেগে ছিটকে চলে যাচ্ছে ক্রুদ্ধ ভিমরুল
লোকলস্করের কান খুঁজে চলে যাচ্ছে ধ্বনিপ্রতিধ্বনি
আমি যে-বাড়িতে জন্মেছিলুম তাকে ভেঙে জন্ম নিয়ন্ত্রণের আপিস তৈরি হয়েছে
অনেক কিছু না-বুঝে না-জেনে না-শিখে মরে যেতে হবে
ওফ্
আমি জানোয়ারের কাছে শিখলুম তর্জনী অনুগত মানুষপনা
বাবার ধর্মের কাছে হাত পেতেছি পরিত্রাণের জন্যে
মায়ের ধর্মহীনতার কাছে ২৫ বছর
মাথার শিয়রে নকল ধারালো দাঁত ভিজিয়ে শোবার জন্যে এবার তৈরি হচ্ছি
এখানে কেউ নিচু কোর্টে হেরে গিয়ে সদর কোর্টে জিতে ফিরে আসে
কেউ মানুষের কাছে জিতে গিয়ে মানুষের কাছে হেরে যায়
ভারতের রাজপথ দিয়ে বুলেটপ্রুফ পেশাদার দেশপ্রেমিকরা আর একলা হাঁটে না
আণবিক চুল্লি আর রেডক্রসের কার্যখেত
আপোশে ভাগ কোরে কর্তব্যবোধে ঘেমে উঠে মানুষ
ভূমধ্যাকর্ষণের হাতে নিজেকে পুরোপুরি ছেড়ে দেবার পর ঘুম আসে
মানুষের আদর খেতে পাথরের নুড়ি চলে আসে পেতলের পূজনীয় সিংহাসনের
সমাজের সোহাগ ছেড়ে পাহাড়জঙ্গলের দিকে চলে যায়
আধান্যাংটো মানুষ ও তার নিজেস্ব দেশলাই
খুলির হোল্ডঅলে থাকে পরিচিত মুখ রাস্তাঘাট আর রঙিন অস্থায়ী মানচিত্র
আমি স্ত্রীলোক থেকে স্ত্রীলোকের কাছে ছুটে গেলুম
নিজের দুঃখকষ্ট চেপে রাখতে
নিজের দু:খ কষ্ট চেপে রাখতে
কাঁচা জল/গরম জল/বাসি জল খেয়েও ভেতরটা সাফ কোর্তে পার্লুম না
আগেকার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা কোরে এলুম
তার প্রসবকালীন ছুটিতে
আমি বাঙলাদেশ বোলতে বুঝছি
আমার কঙ্কালের জয়েন্টে লাগানো সৎ-অসৎ নাটবল্টু
ঘরের ৪টে মারমুখী দেয়াল আমার দিকে এগিয়ে আসছে আর ফিরে যাচ্ছে
ছুরির নিচে গিনিপিগদের সঙ্গে শুয়ে রয়েছি ২৫ বছর
আমি জ্যোৎস্না বোলতে বুঝেছি আমার শীতাতপ নিয়ন্ত্রত চামড়া
গুপোলাগা গোড়ালি সমেত ঠ্যাঙ আজ পাঠিয়ে দিলুম ২১ নং তদন্ত কমিশনে
আজকের খবরের কাগজটা কার লেখা জান্তে পার্লুমনা এখনও
ডাকবাক্সের ভূগর্ভ সুড়ঙ্গ দিয়ে নেবে গেছে
গেল-অসুখে লেখা সব প্রতিবাদপত্র
২টো লাংসের মাঝখানের ফাঁকটুকুতে
হু হু কোরে ঝাপ্টা মেরে উঠতে চায় উদ্দেশ্যহীন বিষাদ
নিরুদ্দিষ্টের প্রতি ছাপানো সবকটা চিঠি আমারি জন্যে দেয়া থাকে কিনা জানিনা
নিজের পায়ে কুঠারাঘাত কোর্তে গিয়ে কুঠার ভেঙে যাচ্ছে ফিদফায়
কোল্কাতার আকাশ দিয়ে এখন সমাজকল্যাণকমিটির কাগজপত্তর উড়ে যাচ্ছে
ঘুমের মধ্যেই আমি আজ সকালের-দিকে ফুঁপিয়ে উঠেছিলুম
এখন স্বপ্ন থেকে উঠেই পেতে দিচ্ছি আর সি সি গাঁথুনি করা কাঁধ
আমি নাপিতের ক্ষুরের কাছে শিখেছি ধৈর্য
আঙ্গিক মানে তোমার হাড় আর হাড়ের আণবিক সাজসরঞ্জাম
এবার আমি নিজেই সবকিছু জাচাই কোরে দেখতে চাই
জান্তে চাই কাকে বলে বিষ কাকে বলে মলয় রায়চৌধুরী
ভরতবর্ষ কারুর বাপের একলার কিনা জান্তে চাই
স্রেফ নিজে আগাপাশতলা ভুগে দেখতে চাই কাকে বলে অধঃপতন
আমি স্বাধীন ভারতবর্ষবোলতে জেনেছিলুম অক্সিজেন
আজ প্রেসের মেশিনের সামনে মাতৃজঠরের কথা মনে পড়ে যায়
ঘুম থেকে উঠে বালিশের নীচে পেলুম স্প্রিঙখোলা ছুরি
বারবার পেছন ফিরেও দেখতে পাচ্ছি না কারা সেই থেকে ফিসফিস কোর্ছে
ছাদের আলসেতে পড়ে থাকা রহস্যময়
হাড়ের টুকরো দেখে কাল ভয় কোর্ছিল
আমার হাড়ের ব্যথা আমি সারাতে পার্লুমনা আজো
ভারতবর্ষের মাটির তলা থেকে জ্বলন্ত মাদুর তুলে এনে বিলোলুম
বন্যাপিড়িত এলাকায়
খিল আর ছিটকিনির কাছে বসে শিখে এলুম আত্মপরিত্রাণ
পুরোপুরি চার দিন গুম মেরে থেকে আমার গলা ভেঙে গেল
আমি খালি পেটে মদ খেয়ে লাফিয়ে দেখেছি কঙ্কাল আওয়াজ
আমি নদীর কাছ থেক জেনে এলুম
মাটিপাথর কামড়ে এগিয়ে যাবার খসড়া পরিকল্পনা
শীতকালেও আমার গোড়ালির ঘাম
আমার মোজায় অসামাজিক গন্ধ ঠুসে তোলে
বাহুমূলে মাটি জমে গিয়ে
আমার ২ কাঁধ ফুঁড়ে বেরোচ্ছে স্পর্শময় ইউকালিপটাস
প্রশান্ত মহাসাগরের আকরিক মাটি
একটা নির্দিষ্ট দূরত্বে গিয়ে চাঁদ হয়ে গেল
আগে বা পেছন দিয়ে যাওয়া সীমান্ত
মানুষের প্রবাসী বা বিদেশী হবার চাল চেলে রেখে
মেঘের নীচে নীচে নেমে যায় ১২০০ মাইল ভ্রাম্যমান ছায়া
সমস্ত কিছুর গা থেকে
তাদের নাম গুলো আলতো কোরে বেরিয়ে আসছে এখন
মানুষের দেয়া আইনানুগ মৃত্যুদন্ড পেয়ে কেবল মানুষই মরে যাচ্ছে
ফ্যাক্ট্রি আর বিবাহ ২ টোরই রেজিস্ট্রি হয়ে চোলছে নিয়মমাফিক
কোল্কাতার মদের ব্যবসা থেকে নৈতিক মাইনে পাচ্ছে ৪৫০০০ডানহাত
১ একরে ১৩৫ জোড়া ঠেসাঠেসি আরামে খাচ্ছে
১৯৬৫ মডেলের কোল্কাতা
প্রস্রাব কোরতে বারন কোরে
কোল্কাতা তার মানইজ্জত বাচিয়ে রাখেছে
গা পড়গনার আশ্রয়প্রার্থী হয়ে ফিরে যাচ্ছে কল মিল কার্খানা
কোল্কাতার আকাশ দিয়ে উড়ে যাচ্ছে ২৭৬০ লক্ষ টাকার মানিঅর্ডার
মানুষের ঘুম খুঁজে বের কোর্ছে রাত্তিরবেলার রোয়াক ফুটপাথ গাড়িবারান্দা
সফল মানুষেরা সন্ধ্যাবেলায় প্রাতঃকৃত্য সেরে নিচ্ছে
৬৮০০০ প্রচারপত্র সকাল থেকে খুঁজে বেড়াচ্ছে কোল্কাতার ফাঁকা দেয়াল
উৎসব আর ধর্মানুষ্ঠানের রুটিন মেনে ঘা বদল কোরে নিচ্ছে চাকুরিয়া ভিকিরি
রাদ্দুপুরে মাঝসড়কের ওপর লাল আলো রেখে জেবঅদের রং ফেরাচ্ছে উন্নয়নকামী পেন্টার
রেডিওতে কবিতা আর ভোটের ফলাফল খোলসা কোরে ব্রডকাস্ট হচ্ছে
দাঁতে দাঁত চেপে আমি অপেক্ষা কোর্ছি চলন্ত ফুটবোর্ডে
আমার নিজেরি বাড়ির খোঁজে আমি রাস্তায় রাস্তায় ২৫ বছর ঘুরে বেড়ালুম
বসতিবিরল এঁদো গলির মাটিতে ছড়ানো
অজস্র ধবধবে পাশবালিশ ডিঙিয়ে আমি হেঁটে যাচ্ছি
থামগুলোতে পিঠ ঠেসে দাঁড়াবার জন্যে জায়গা কাড়াকাড়ি কোর্ছে রাংবেরং বেশ্যারা
এখন নিমতলা কেওড়াতলার দিকে কাঁধে চড়ে চলে যাচ্ছেন ৪৯ জন আরামখেকো লাশ
আমার সেই শ্রদ্ধেয় পূর্বপুরুষদের কথা আমি ভাবছি
যিনি এক টাকায় কোল্কাতাকে বেচে দিয়েছিলেন
চিঠি লেখার পর সারা কোল্কাতায় ১টাও ডাকবাক্স খুঁজে পাচ্ছি না
সন্ধে হবার দরুন যাবতীয় নক্ষত্র এখন পৃথিবীর কাছাকাছি নেবে আসছে
আমি আমার রক্ত থেকে জাগুয়ারের চামড়ার রং টেনে তুলতে পার্ছি না
নিজের চামড়ার জন্যে
ঝরাপাতার ভেতর দিয়ে ছুটে যাওয়া সাপ আমার দিকে ১বারো চেয়ে দ্যাখেনি
মশার উড়ন্ত ব্লাডারে ঠাসা আমার ক্রুর রক্ত আঙুলে পিষে ঘেন্না কোর্ছে
আমি গঙ্গার জলে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব কোরে ফেলেছিলুম পৈতের দণ্ডিভাসানের দিন
হৃদয়ের জায়গায় ১টা বাদুড় ঝুলিয়ে ফুটপাথ দিয়ে বাড়ি ফির্ছে সফল মানুষেরা
পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে আমি দেখেছিলুম আমার দূর গাঁয়ের জ্বলন্ত বাড়িঘর
পাঁজরের শিক দিয়ে কবিতার পান্ডুলিপি গলিয়ে আমি আমার কঙ্কালের ফসিল হবার অপেক্ষায় রয়েছি এখন
প্রথম প্রেমিকার পাঠানো খাম আমি সাহস কোরে খুলতে পার্ছি না
কিছুটা হাঁটার পর পেছনে ফিরে মনঃপুত কুকুরের থাবার ছাপ গুনে নিচ্ছি
দেখছি ১টা ছুটন্ত টপেনের অ্যালার্ম শেকল ধরে ঝুলছর তার সমস্ত যাত্রীরা
জুতোর ভেতরে মোজার ছেঁড়া জায়গাগুলো লুকিয়ে পা ফেলছি এখন
জুতোর মধ্যেই ঘৃণা আর পূজনীয়তা আবিষ্কার কোর্ছে নীতিমেজাজ বিদগ্ধ মানুষেরা
৫.৩৮ ডি.সে. শীতেও আমি আগুন না পুইয়ে ইজি চেয়ারে চুপচাপ শুয়ে রইলুম
নীলার রোঁয়ায় জ্বলা-নেভা ১টা ছোট্ট হাই ভোল্টেজ ঘাম আমার রক্তকে তোল্পাড় কোরে দিচ্ছে
ঘুমের মার্ফত মনে পড়ছে চেনাশোনা উরুগুলোর জাপানি খোলতাই
গাছগাছালির ওপর চিৎ হয়ে আদর খাচ্ছে কুয়াশার দুষ্কৃতিকারী চাদর
নিহত কীটের ২পাশে ঝুলে-পড়া ঠ্যাঙের কাছে ফুলের পাপড়ি শিখে নিচ্ছে স্বীকৃতি দেবার কায়দা
টেলিগ্রাফের ছেঁড়া নলির সঙ্গে ধানক্ষেতে লুটোচ্ছে আর্তসংবাদের হিসেব-করা কাকুতি
পালকসমেত ১-১/২ কিলো মাংসসুদ্ধু বাড়ি ফেরছে ১জোড়া জংলি হাঁস
আমি জান্তে পারলুম না কী কোরে মাটির ভেতরে নিস্পিস কোরে ওঠে বীজের গর্ভচর পোকা
প্রতি মিনিটে ৪০০০০ লোক দুঃখ-কষ্টে ককিয়ে উঠছে কোল্কাতার পথ-ঘাট-গেরস্হালিতে
একাধখেপ লাগাম ছিঁড়ে ছিৎরে বেরিয়ে যাচ্ছে আমার হামলাদার আক্রোশ
নালির পাঁকে হাত-পা চুবিয়ে ঝাঁঝা রোদ্দুরে ১ গেলাস জল খুঁজছি আমি
স্ত্রীলোকের ঠোঁট থেকে এঁটো অ্যালকোহল তুলে আস্তিনে পুঁছে নিয়েছিলুম
এখন এই রাত্তির বেলায় সমুদ্রের ঢেউয়ের ওপর চিৎ হয়ে আলতোভাবে শুয়ে লাজুক মাছেদের শিস শোনার ইচ্ছে হচ্ছে আমার
পিয়ানো অ্যাকর্ডিয়ানের বেলোর ফুটো দিয়ে আমার দিকে উড়ে আসছে লাল উন্মত্ত জোঁকের মিউনিসিপাল দল
সারি-সার- মড়ার শক্ত মুঠো খুলে আমি চকিত বোতাম জড়ো কোর্ছি
বিবরঘাঁটি খুঁড়ে আমার ৪দিকে সঙিন উঁচিয়ে রেখেছে শান্তিকামী মানুষেরা
দাফনকরা লাশের ৮দিকে পিল্পে গেঁথে পেছিয়ে যাচ্ছে অধ্যবসায়ী ঘাস
সাইকোথেরাপি আর বিদ্যুৎশকে বিবাহবিচ্ছেদ রুখে আজকাল সিঁদুরের খরচ বেড়ে গেছে
আমার ২৫বছরের ক্ষয়ে-যাওয়া মজবুত গোড়ালি বাঁক নিয়ে আমাকে ওন্যদিকে নিয়ে যাচ্ছে
কায়েমি স্বার্থের জোট জমিয়ে তুলছি আমি আমার হিসেবি ঘিলুর হুঁশিয়ার খাপখোপে
আমার চামড়ার পাতলা চাদরের নিচে চলাফেরা কোর্ছে আমার কর্মফল
২০৬টা হাড়ের টাল সামলে মৃত্যুর দিকে চলে যাচ্ছি আমি বৈধাবৈধ এঁটোকাঁটা সমেত
আমার কুরুচিকে আমি লেলিয়ে দিচ্ছি আমারি পেছনে
দুঃখ কষ্ট পাবার জন্যে মানুষেরা লায়েক হয়ে নিচ্ছে
আমার ডান হাতের ছেঁড়া শিরার ভেতর থেকে ভেসে আসছে ২০০০ কঙ্কাল ভাঙাভাঙির সালতামামি
মৃত্যুর টেন্ডার খাম খুলে আমারি ৩২পয়েন্ট হাফটোন ছবি পাচ্ছি
নিজেরি চিঠি নিয়ে নিজের বাড়ি খুঁজে পাচ্ছে না ডাকপিওন
নিজের রকএর লাল কেলাসিত টুকরোতে আংটির বাহার কেমন খুলতে পারে আমি ভেবে দেখছি এখন
শরীরের বিভিন্ন জায়গা কাঁপিয়ে শীতকে আমার গায়ে বসতে দিচ্ছি না
ঘুমের ভেতরে আমি শিউরে উঠছি
১ই ব্যাপার থেকে তৈরি হচ্ছে সত্যি-মিথ্যে
১ই ব্যাপার থেকে তৈরি হচ্ছে জ্ঞানী আর অজ্ঞান হবার মশলাপাতি
মাছমা২স তরিতর্কারি থেকে আমি তৈরি কোর্ছি আমার রক্তমাংস
মাছমাংস তরিতর্কারি থেকে আমি তৈরি কোর্ছি আমার শুক্রকীট ও কৃমিকীট
মাছমাংস তরিতর্কারি থেকে আমি তৈরি কোর্ছি আমার মলমুত
মাছমাংস তরিতর্কারি থেকে আমি তৈরি কোর্ছি আমার চোখের জল
আমাকে মানুষেরা যাকিছু শিখিয়েছে আমি সেসব ভুলে যাবার চেষ্টা কোর্ছি
শীতকাল বলে আমি কোটের নিচে ময়লা শার্ট পরে ঘুরে বেড়াচ্ছি
পৃথিবীর প্রতিটি পার্লামেন্টের ল্যাভাটরিতে দৈনিক ৫০০ লিটার রাজনীতি সাংবাদিকদের নজর এড়াচ্ছে
মানুষই মানুষকে শেখাচ্ছে পড়াচ্ছে শৃঙ্খলার গুণ ও হিটলারের আত্মকথা
আমি মলয় রায়চৌধুরীকে একদম বুঝে উঠতে পার্ছি না
দেশ-বিদেশের ওপর দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে যুদ্ধবিরতি রেখা
গুনোগাত দিয়ে নাপিতের কাছ থেকে মানুষেরা মেজাজে আদর খাচ্ছে
সমুদ্রের ১তলার হলঘরে মশাল জ্বালিয়ে আমি সাঁৎরে খুঁজে বেড়াচ্ছি ইং ও বাং ভাষায় আমার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
এখন ভারতবর্ষময় ৯০০০লোক তাদের ছেলেপুলের বিয়ের পণ গুনছে বিবাহ আড্ডায় উবু হয়ে
অনেক উঁচুতে দাঁড়িয়ে আমি দেখছি সমুদ্রের দিকে প্রতিযোগিতামূলক সাঁতার দিয়ে ফিরে যাচ্ছে ভাঁটায় মার খাওয়া নদীর জল
টেবিলের নিচে ৩৫০০০০ আমলার ঘুষাঘুষময় স্বদেশি পা নেচে উঠছে রোজ
ডাকযোগে উচ্চশিক্ষা পেয়ে ফুলে উঠছে বাঙালি মফসসল
অন্ধকার ঘরে বসে আমি চুপচাপ সিগারেটের আগুন দেখছি
দিনকেদিন আমার কপালে দাগ পড়ে যাচ্ছে
আমার মায়ের গর্ভের ফসফরাস গায়ে লাগিয়ে বিপদসংকেতময় রাস্তা খুঁজে বের কোর্টে চাইছি
তুঁতের ফিকে নীল ধোঁয়ার মধ্যে দিয়ে চলে গেছি ফুটুসের আড্ডায়
অঞ্জলি দিতে গিয়ে আমি আমার হাত ২টো খুঁজে পাচ্ছি না
গাছের ছায়াকে ঘুরে-ঘুরে দেখতে চাইছে অধ্যাবসায়ি রোদ
আমার গায়ের সমস্ত যন্ত্রণা কপালের বিষফোড়ায় জড়ো হয়ে ঘোঁট পাকাচ্ছে
চাঁদের শোষণ ক্ষমতা আমার রক্তের ভেতরে লেলিয়ে তুলছে অমাবস্যা/পূর্ণিমার জ্বর
ওফ
আমার ভালোলাগছে না এই সব
আমি মরে যাব আমি মরে যাব আমি মরে যাব
আমার দুঃখ-কষ্ট বুঝতে না পেরে ভেতরে-ভেতরে আমার হাড়-গোড় চিড় খেয়ে যাচ্ছে
খারাপভাবে জড়োকরা গা-গতর দিয়ে তৈরি হয়েছে আমার দেহাভিমান
সমস্ত বারন অমান্য কোরে আমি আমার আত্মার কাছে যেতে চাইছি
মাটিতে ভিজে পায়ের ছাপ পড়ছে পায়ের চেটোয় উঠে আসছে ধুলোবালি
অবলা ভিতু জাহাজকে বাঁচাতে ছুটে যাচ্ছে লাইটহাউস
নারীর বেহায়া লজ্জা হাঁটকে আমি বহুবার শিতকাল-গ্রীষ্মকাল ঠাওর করেছি
স্ত্রীলোকের চেয়ে ইউরেনিয়াম আজকাল বেশি দরে বিকোয়
আণবিক ফোড়া কম্প্রেস করা হল বিজ্ঞান
শুক্রকে রজঃকীটের সঙ্গে মেলামেশা কোর্র্তে না-দেয়া বিজ্ঞান
নারীর গর্ভকে অকেজো কোরে দেয়া মানে বিজ্ঞান
কেন পৃথিবীর মাটিতে আপেল নেবে আসে আমি জানলুম না
আমি গ্রন্হের বদলে মানুষকে দিয়েলুম জুতোর খালি বাক্স
নিজের খোঁজে ফিরে এলুম মেখলিগঞ্জ থেকে ধাপড়াহাট
১জন হাফ-চেনা নারীর খোঁজে চলে গেলুম ধরমপুর থেকে পিপারিয়া
আমি ভোটের বাক্সের কাছে গিয়ে বুঝতে পারি হাত ২টো বাড়িতে ফেলে এসেছি
১ম/২য়/৩য় শ্রেণির ঠিকাদারের পাঠানো কাঠ পোঁছে যাচ্ছে শ্মশানে
লোথিয়ান দ্বীপ বা পাঙাসমারির চরের ওপরেও ছড়িয়ে থাকে বিলাতফেরত মানুষির উরুর হাড়া
আমি দেখলুম হাতঘড়িতে পরিয়ে-রাখা দরদি কান্নামোছা হাত
আমি নালির পাঁক থেকে রংওঠা বেলুন তুলে ফুলিয়েছিলুম
পাখির গু থেকে বীজ বেরিয়ে এসে দেয়ালে জন্মাচ্ছে বিশাল বট
এখন আমি প্রত্যেকটা ব্যাপারের শব্দ শুনতে পাচ্ছি
আমি আমার নিজের পাশে শুয়ে নিজেকে ভালোবাসলুম
ইউলিয়াম ব্লেকের সঙ্গে শুয়ে রইলুম আঙুরমাচানের নিচে
হুইটম্যানের চটের ওপর শুয়ে মৌচাক থেকে বাড়তি মধু ঝরে পড়ার গম্ভির শব্দ শুনলুম
নীলার লেপের নিচে শুয়ে আদ্দেক রাত্তিরে উঠে এলুম নিজের ঠান্ডা বিছানায়
জীবনানন্দের বিছানার খোঁজে রাসবেহারি অ্যাভেনিউর ফুটপাথে ছুটোছুটি কোর্লুম ঘুমন্ত অবস্হায়
খবরের কাগজ থেকে শিখেছি দেশপ্রেম
কৃতী পুরুষদের হিড়িক এড়িয়ে চলে এলুম ২৫ বছর
আধঘুম থেকে লাফিয়ে উঠে নিজের গলা টিপে বন্ধ কোরে দিলুম কুকুরের গরররর চোখরাঙানি
মানুষ হওয়ার দরুনই আমাকে খাবারের দোকানে লাইন দিতে হল
আমি কেন মানুষের মারপ্যাঁচে আটকে রইলুম জান্তে চাই এবার
পুরোপুরি অক্ষরজ্ঞানশূন্য হবার জন্যে আমি কানের তুলো ঝেড়ে খুঁজে দেখছি প্রথম কাঁকর
নিজের শরীরের কেরাসিন বাঁচিয়ে রাখতে হয় চিতার বিছানা ওব্দি
সিমেন্টের মেঝের ওপর বালি ঘষার শব্দে আমার দাঁত শিউরে উঠছে
আমি কর্তৃত্বাভিমানকে লাথি মেরে চলে এলুম নিজের হৃদযন্ত্রের কাছে
নিজের হৃৎপিন্ডের ওপরে রাখলুম আমার ২৫বছরের ঘেয়ো ময়লা হাত
শরীরের ৯টা দরোজা খুলে রেখে ২৫বছর কেবল টুথব্রাশের ব্যবহার কোর্লুম
পুরোনো দেয়ালের কাছে দুহাত পেতে নিলুম নোনা ইঁটের ঝুরো ব্যর্থতা
দরোজার খিল এঁটে মাঝঘরে হাঁটু গেড়ে বসে রইলুম ইহলৌকিক গায়ের মধ্যে
স্টোভের পোকার দিয়ে খোঁচাতে হল আমার গায়ের সবকটা উদ্বিগ্ন লোমমুখ
আসল সঙ্গীত শোনার জন্যে জেলের দেয়ালের ইঁট এনে তার ওপর কান পেতে শুলুম
অসীম বলতে আমি বুঝছি আমার নিজেরি গায়ের চামড়া
আমার সামান্য ফুঁ-এ
পৃথিবীর সমস্ত গ্রন্থের অক্ষর উড়ে তালগোল পাকিয়ে যায়
প্রেমিকার বিয়ের নেমন্তন্ন খেয়ে আমার আঁচানো হল না
ভিষণ শীতেও আমি ৩-১/২ ঘন্টা বাথটাবের ঠান্ডা জলে শুয়ে গাবের গরম তুলে ফেলতে পার্লুম না
মদ খেয়ে মাতলামো সারিয়ে তুলতে গেলুম খালাসিটোলায়
আজো আমার বোঝা হল না সুখ-দুঃখের আসল তফাত
আত্মার পচন নেই বলে আমি নিজের আত্মা ফেলে দিতে চাইছি
চোখ বুজে দেখতে পাচ্ছি মায়ের গর্ভের গোলাপি রং
শরীরের চাদ্দিকময় ২৫০০০আঁতের অতিসূক্ষ্ম ঝুরি নেবে রয়েছে
রেডিওয় থিয়েটার শুনে কেঁদে ফেলছে কোল্কাতার নরমহৃদয় মানুষমানুষী
গাদাগাদি কোরে বিয়োতে-বিয়োতে গাঁ-মাঠ-পরগণার দিকে ছুটে যাচ্ছে কোল্কাতা
অস্হির রাস্তার ২পাশ দিয়ে পেছোচ্ছে স্হির গাছপালা
উচ্চারিত কথার গা থেকে কার্বনডায়ক্সাইড শুষে নিচ্ছে গাছের ভিনিগার
বোবা গাছ থেকে অক্সিজেন পাওয়া যাচ্ছে বাজার দরের চেয়ে অনেক সস্তায়
টাকাপয়সার জন্যে আমি ভবিষ্যত জমিয়ে রাখতে পার্লুম না
অনেক পুতুলেরও নীতিবোধ চাগিয়ে উঠছে আজকাল
মশারি টাঙাবার পর আমার ঈর্ষাবোধ চাগিয়ে ওঠে
ছাদের ওপর দাঁড়িয়ে পঙ্গপালের ঝাঁক দেখতে আমার ভালো লেগে যায়
পঙ্গপালের ঝাঁকের পেছনে উড়ে যায় ৮০০০০০ উদবোধনকারী মন্ত্রী ও তাদের কাঁচির দঙ্গল
প্রাচীন মায়াপুর থেকে উড়োখামে চলে আসে ভারি আর বেয়ারিং ভালোবাসা
শীতের জন্যে রঙিন কাপড়ের ট্রুজারের ভেতরে উলঙ্গ হয়ে ঢুকে আছি
গায়ের সবকটা তিল আর আঁচিল ক্রমশ এঁটুলিতে বোদলে যাচ্ছে
দুমকার গেরুয়া কাঁকরের ওপর দিয়ে খালি পায়ে দৌড়ে মাথা ঠিক কোরে নিতে চেয়েছিলুম
এখন আমি এক এক কোরে ওড়াচ্ছি আমার রক্তমাখা চোখ
গাছের গায়ের ভেতরে লুকিয়ে রয়েছে খিল দেরাজ ফাঁসিকাঠ
আমি এখন তৈরি কোর্ছি ৩য় বিশ্বযুদ্ধের খসড়া খেয়োখেয়ি
ভিড়ের ভেতরে ঢুকলে কনুই ২টো নিয়ে যেতে হয়
কোল্কাতার প্রতিটি রাস্তায় পড়ে রয়েছে ধ্বস্তাধ্বস্তির মুনাফাকারী চিহ্ণ
লাইসেন্স করানো বেড়াজাল গিয়ে পড়ছে তোপসের কমার্শিয়াল আড্ডায়
সমদ্বিবাহু ঢেউদের মাঝখান দিয়ে চলে যাচ্ছে পৃথিবীর শেষ নৌকো
শুশুক ডুবে যাবার পর ঢেউদের আঢাকা গর্ভ আবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে
মানুষদের বাড়িতে বেড়া লাগানোর দর্কার হয়ে থাকে সভ্যতার সার্টিফিকেট হিসাবে
আমি যেখানেই বোসছি ঘরের প্রত্যেকটা ছবি আমার দিকে তাকাচ্ছে
মুখের ওপর স্ত্রীলোকের মুখ চেপে ধরে ডাবের ঠান্ডা জল খাবার ইচ্ছে হচ্ছে এসময়
স্নানের পর নীলার শীতল আর নরম চামড়ার কচি আতর ভেসে আসছে
ঘুম থেকে উঠে দেখছি সারা শরীর ছড়ে গেছে
ভারি বুট পায়ে অন্ধকার গলির মধ্যে দিয়ে ছুটে যাচ্ছে আমার নৈতিক আত্মহত্যার খুনখারাপ আততায়ী
আমার শরীরে এখন চোলছে কেপমারি খুনজখম রাহাজানি ছিন্তাই
আমার হাত-পা দিয়েই আমাকে সকলে মিলে পেটাচ্ছে
দেয়ালে কপাল ঠুকে কাঁদার জন্যে জেরুজালেম ওব্দি চলে যাচ্ছে মানুষ
পরমাণুশক্তির উন্নয়ন সত্বেও হারানো ছেলেরা ভেসে উঠছে পচা ডোবায়
তমসার কাছে মৃত্যু ভিক্কে চাইতে গিয়ে লুকিয়ে ফিরে এলুম
মলয়ের বুকের বাঁদিকে ছোরা বসিয়ে খুঁজলুম তার দেহাত্মবিবেক
পৃথিবীকেও মাঝে-মাঝে কেন অচেনা লাগে জানি না
রোগির গলা ফুঁড়ে গ্লুকোজ যাচ্ছে আবার তাকে হিঁচড়ে রাস্তায় নাবিয়ে জীবনের ধকল সওয়ানো হবে বলে
আজ জানি না কেন ১জনকে মৌলালিতে মারা মানে খুন রাজশাহিতে মারা মানে দেশপ্রেম
ভালো মানে ভালো কিনা বুঝে নিতে আমি আকন্দের রোঁয়ার সঙ্গে ঘুরে বেড়ালুম
কিছুদূর ঠেলে নিয়ে যাবার পর মানুষেরা স্টার্ট নিচ্ছে
শ্বেত পাথরের ঠান্ডা মেঝেয় উদোম গায়ে শুয়ে থাকার ইচ্ছে হচ্ছে এখন
হ্যাঙারে গাবের চামড়া ঝুলিয়ে রেখে নিজের কঙ্কালের মধ্যে ঘুমোলুম ২৫ বছর
আমি আমার বাবার কাছ থেকে পেয়েছি লোভ আর ঔদাসীন্য
আমি মায়ের কাছে পেয়েছি মোক্ষম ক্রুরতা আর ক্ষমা আর আত্মস্বীকার
বা২লাদেশকে চিরে দেয়া লাইনটাকে তুলে হি২স্র তেলচুকচুকে চাবুক কোরে নিয়েছি আজ
চোখের সামরিক রক্তে
ক্রোধ জমছে ধিকিয়ে-ধিকিয়ে
ভারতবর্ষের ১০৮দিকে আমি নিস্তারহীন নজর রাখছি
খারাপ মানে খারাপ কিনা জেনে নিতে আমি ছাপাখানার মেশিনের ময়লায় লুকিয়ে রইলুম
ওফ
প্রতিহিংসা জের্বার কোরে তুলছে
নিজের সঙ্গে শলাপরামর্শ এঁটে ঠিক কোর্ছি কী কোরে প্রতিশোধ নেয়া যায়
এক-একটা চোটে ফেটে গুঁড়িয়ে যেতে চাইছে আমার কঙ্কালের সমঝদার ঘরদোর
আক্রমণের আগে আমি ২দন্ড জিরিয়ে নিচ্ছি
ধাক্কা খেয়ে পড়ে যাবার পর আমি উঠে দাঁড়িয়ে ফুঁসছি আর গর্জাচ্ছি
বালামচি দিয়ে চোটজখম ঝালাই কোরে স্রেফ ন্যাটা হাতে লড়ে যাচ্ছি ২৫ বছর
সমস্ত-কিছুর সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্যে আমার চোখমুখ থমথম কোর্ছে এখন ।।