প্রেমের মজুর
ক্রিজ নেই, জল-কাচা পোশাক বেশ দুঃখি মনে করে নিজেকে
এইখানে, আগ্রার দুর্গের দেয়ালে বাবা যে-মেয়েটির নাম
লিখে গিয়েছিলেন, আমার মা নয়
আমি লিখলে অনেক তরুণীর নাম লিখতে হবে
তাই কলেজ থেকে ট্যুরে গেলে, বিভিন্ন ধ্বংসস্তুপে
এক-একজনের নাম লিখে এসেছি
তাদের ছেলে-মেয়েরা এসে আমায় ধন্যবাদ জানিয়ে যায়
রাত্তিরকে শাশ্বত করে দিয়েছি সেসব দেয়ালে
প্রেমের ইচ্ছাশক্তি দিয়ে ; গরম আর ঠাণ্ডা শব্দ, বৃষ্টিতে ভেজে,
শ্যাওলা জমে । বাবা অরগ্যান বাজাতেন
তাঁর সুরের পালকগুলো নিয়ে আমি বেহালা শিখেছিলুম--
তার বাঁধতে শিখিনি, কাঁটাতার পেরোলেই সবুজ ধানখেতের দেশ
টিকটিকির ল্যাজে কতো শিল্পবোধ ; খসে যাবার পরও জীবন্ত
ছেঁড়া কবিতার বইয়ের মতন কবিকে নাড়ায়
ঈর্ষা আর যন্ত্রণার প্যাশন । স্বত্ত্ব ব্যাপারটা লালসা, বাবা জানতেন
মারা গেলেন যখন, তখন মারা যাননি, লোকেরা খবর পাবার পর
আসলে মারা গেলেন ; পৃথিবী অপার্থিব হয়ে গিয়েছিল
দুর্গের দেয়ালে লেখাছিল, “পেতে গেলে তোমায় বিয়ে করতে হবে
কিন্তু বিয়ে করতে চাই আরেকজনকে”, বাবার হাতের লেখা নয়--
সলতের কালোই আলোর কেন্দ্র ; প্রতিটি কথার শেষে হাসি
যেন খামে জিভ দিয়ে ইশারা সেঁটে দিলেন
চরিত্রের আভাস মেলে শরীরের ভাষা থেকে
মোড়ের মাঝখানে ব্রোঞ্জমূর্তি নিয়ে, তর্জনী তুলে বা নামিয়ে
কাকপ্রিয় মাথা নিয়ে উনি দাঁড়াতে চাননি--
ধ্বংসাবশেষের দেয়ালে-দেয়ালে প্রেমিকার নামকে
নিজের নামের সঙ্গে বেঁধে রাখাই অমরত্ব
আর সেটাই তো প্রেমের বঁধুয়া মজুরের কাজ, জানতেন ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন