( জীবনানন্দের 'আটবছর আগের একদিন' কবিতার প্যাশটিস )
শোনা গেলো লাশকাটা ঘরে
নিয়ে গেছে তারে, আর তার বউ ও শিশুকে
কাল রাতে - ফাল্গুনের রাতের আঁধারে
যখন ভাঁড়ারে আর একদানা চাল নেই
বধূ-শিশু খুন করে মরতে বাধ্য হলো ।
বধূ শুয়ে ছিল পাশে - শিশুটিও ছিল
প্রেম ছিল, ছিলনাকো কিছুই খাবার - জ্যোৎস্নায় - তবু সে দেখিল
ক্ষুধার প্রেতিনী ? ঘুম তো আসে না রাতভর
কেননা ক্ষুধার্ত পেটে হয়নি ঘুম বহুকাল - লাশকাটা ঘরে শুয়ে ঘুমায় এবার ।
এই ঘুম চেয়েছিলো বুঝি !
বিষ-গ্যাঁজলা মাখা ঠোঁটে মড়কের ইঁদুরের মতো ঘাড় গুঁজি
আঁধার ঘুঁজির বুকে তিনজন খালি পেটে ঘুমায় এবার
কোনোদিন এই পরিবার জাগিবে না আর
খালি পেটে গাঢ় বেদনার
অবিরাম অবিরাম ক্ষুধা
তিনজনে সহিবে না আর --
এই কথা বলেছিল তারে
চাঁদ ডুবে চলে গেলে - বুভুক্ষু আঁধারে
যেন তার মেটেল দুয়ারে
মোটরসাইকেলবাহী ধর্ষকেরা এসে
তবুও তো নেতা জাগে
লুম্পেনেরা এসে ভোট মাগে
আরেকটি নির্বাচনের ইশারায় - অনুমেয় উষ্ণ হুমকি দিয়ে
টের পাই যুথচারী আঁধারের গাঢ় নিরুদ্দেশে
চারিদিকে র্যাশনের ক্ষমাহীন বিরুদ্ধতা ;
নেতা তার আরামের সঙ্ঘারামে নেশা করে বুকনি ঝাড়তে ভালোবাসে ।
শ্রম ঘাম রক্ত চুষে আড্ডায় ফিরে যায় নেতা
অবরোধ-করা মোড়ে অ্যামবুলেন্সে কান্না দেখিয়াছি ।
কাঠফাটা খরা নয় - যেন কোনো চালের ভাঁড়ার
অধিকার করে আছে ইহাদের ভাব
দলীয় গুণ্ডাদের হাতে
বধূটি প্রাণপণ লড়িয়াছে
চাঁদ ডুবে গেলে পর নিরন্ন আঁধারে তুমি বউটিকে নিয়ে
ফলিডল খেয়েছিলে, শিশুটির গলা টিপে মেরে
যে-জীবন ফড়িঙের দোয়েলের
তা তোমার শৈশব থেকে ছিল জানা ।
পেটের ক্ষুধার ডাক
করেনি কি প্রতিবাদ ? ডেঙ্গুর মশা এসে রুক্ষ চামড়ায় বসে
রক্ত না পেয়ে দেয়নি কি গালাগাল ?
জোয়ান লক্ষ্মীপেঁচা চালাঘরে বসে
বলেনি কি : 'সংসার গেছে বুঝি দারিদ্রে ভেসে ?
চমৎকার !
হাড়গিলেদের ঘরে ইঁদুরও আসে না ?'
জানায়নি পেঁচা এসে এ তুমুল ক্ষুব্ধ সমাচার ?
জীবনের এই স্বাদ - সুপক্ক ধানের ঘ্রাণ
কতোকাল পাওনিকো তুমি
মর্গে আজ হৃদয় জুড়োলো
মর্গে - শীতাতপে, তিনজন
ফলিডলে গ্যাঁজলা-ওঠা ঠোঁটে !
শোনো এ তিন মৃতের গল্প - ফিবছর ধান
কেটে নিয়ে চলে গেছে গাজোয়ারি করে
বি পি এল কার্ডের সাধ
মেটেনি বউকে পাঠিয়েও
দরবারি নাশকতা নিচে টেনে বধূ
মধু - আর মননের মধু
যাপনকে করতে পারেনি ক্ষুধাহীন
হাড়হাভাতের গ্লানি বেদনার শীতে
সইতে হয়েছে প্রতিদিন ;
তাই
লাশকাটা ঘরে
তিনজন শুয়ে আছে টেবিলের পরে ।
তবু রোজ রাতে আমি চেয়ে দেখি, আহা,
জোয়ান লক্ষ্মীপেঁচা চালাঘরে বসে
চোখ পালটায়ে কয়, 'সংসার গেছে বুঝি দারিদ্রে ভেসে ?
চমৎকার !
হাঘরের মেটে ঘরে ইঁদুরও আসে না।'
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজও চমৎকার ?
স্বাধীনতার সত্তর বছর পর !
সকলে তোমার মতো সুযোগ সন্ধানী আজ - বুড়ি চাঁদটাকে ওরা
আদিগঙ্গার পাঁকে করে দিলে পার ;
যারা আসে তারাই শূন্য করে চলে যায় টাকার ভাঁড়ার ।
শোনা গেলো লাশকাটা ঘরে
নিয়ে গেছে তারে, আর তার বউ ও শিশুকে
কাল রাতে - ফাল্গুনের রাতের আঁধারে
যখন ভাঁড়ারে আর একদানা চাল নেই
বধূ-শিশু খুন করে মরতে বাধ্য হলো ।
বধূ শুয়ে ছিল পাশে - শিশুটিও ছিল
প্রেম ছিল, ছিলনাকো কিছুই খাবার - জ্যোৎস্নায় - তবু সে দেখিল
ক্ষুধার প্রেতিনী ? ঘুম তো আসে না রাতভর
কেননা ক্ষুধার্ত পেটে হয়নি ঘুম বহুকাল - লাশকাটা ঘরে শুয়ে ঘুমায় এবার ।
এই ঘুম চেয়েছিলো বুঝি !
বিষ-গ্যাঁজলা মাখা ঠোঁটে মড়কের ইঁদুরের মতো ঘাড় গুঁজি
আঁধার ঘুঁজির বুকে তিনজন খালি পেটে ঘুমায় এবার
কোনোদিন এই পরিবার জাগিবে না আর
খালি পেটে গাঢ় বেদনার
অবিরাম অবিরাম ক্ষুধা
তিনজনে সহিবে না আর --
এই কথা বলেছিল তারে
চাঁদ ডুবে চলে গেলে - বুভুক্ষু আঁধারে
যেন তার মেটেল দুয়ারে
মোটরসাইকেলবাহী ধর্ষকেরা এসে
তবুও তো নেতা জাগে
লুম্পেনেরা এসে ভোট মাগে
আরেকটি নির্বাচনের ইশারায় - অনুমেয় উষ্ণ হুমকি দিয়ে
টের পাই যুথচারী আঁধারের গাঢ় নিরুদ্দেশে
চারিদিকে র্যাশনের ক্ষমাহীন বিরুদ্ধতা ;
নেতা তার আরামের সঙ্ঘারামে নেশা করে বুকনি ঝাড়তে ভালোবাসে ।
শ্রম ঘাম রক্ত চুষে আড্ডায় ফিরে যায় নেতা
অবরোধ-করা মোড়ে অ্যামবুলেন্সে কান্না দেখিয়াছি ।
কাঠফাটা খরা নয় - যেন কোনো চালের ভাঁড়ার
অধিকার করে আছে ইহাদের ভাব
দলীয় গুণ্ডাদের হাতে
বধূটি প্রাণপণ লড়িয়াছে
চাঁদ ডুবে গেলে পর নিরন্ন আঁধারে তুমি বউটিকে নিয়ে
ফলিডল খেয়েছিলে, শিশুটির গলা টিপে মেরে
যে-জীবন ফড়িঙের দোয়েলের
তা তোমার শৈশব থেকে ছিল জানা ।
পেটের ক্ষুধার ডাক
করেনি কি প্রতিবাদ ? ডেঙ্গুর মশা এসে রুক্ষ চামড়ায় বসে
রক্ত না পেয়ে দেয়নি কি গালাগাল ?
জোয়ান লক্ষ্মীপেঁচা চালাঘরে বসে
বলেনি কি : 'সংসার গেছে বুঝি দারিদ্রে ভেসে ?
চমৎকার !
হাড়গিলেদের ঘরে ইঁদুরও আসে না ?'
জানায়নি পেঁচা এসে এ তুমুল ক্ষুব্ধ সমাচার ?
জীবনের এই স্বাদ - সুপক্ক ধানের ঘ্রাণ
কতোকাল পাওনিকো তুমি
মর্গে আজ হৃদয় জুড়োলো
মর্গে - শীতাতপে, তিনজন
ফলিডলে গ্যাঁজলা-ওঠা ঠোঁটে !
শোনো এ তিন মৃতের গল্প - ফিবছর ধান
কেটে নিয়ে চলে গেছে গাজোয়ারি করে
বি পি এল কার্ডের সাধ
মেটেনি বউকে পাঠিয়েও
দরবারি নাশকতা নিচে টেনে বধূ
মধু - আর মননের মধু
যাপনকে করতে পারেনি ক্ষুধাহীন
হাড়হাভাতের গ্লানি বেদনার শীতে
সইতে হয়েছে প্রতিদিন ;
তাই
লাশকাটা ঘরে
তিনজন শুয়ে আছে টেবিলের পরে ।
তবু রোজ রাতে আমি চেয়ে দেখি, আহা,
জোয়ান লক্ষ্মীপেঁচা চালাঘরে বসে
চোখ পালটায়ে কয়, 'সংসার গেছে বুঝি দারিদ্রে ভেসে ?
চমৎকার !
হাঘরের মেটে ঘরে ইঁদুরও আসে না।'
হে প্রগাঢ় পিতামহী, আজও চমৎকার ?
স্বাধীনতার সত্তর বছর পর !
সকলে তোমার মতো সুযোগ সন্ধানী আজ - বুড়ি চাঁদটাকে ওরা
আদিগঙ্গার পাঁকে করে দিলে পার ;
যারা আসে তারাই শূন্য করে চলে যায় টাকার ভাঁড়ার ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন