রূপকথার একশো বছর
মলয় রায়চৌধুরী
কেউ কি ভেবেছিল কখনও ‘জয় বাংলা’ ধ্বনি দিয়ে বাংলাভাষী একজন
নেমে আসবে রূপকথা থেকে ? অখ্যাত কবির রোমকূপে হর্ষের ঝড় তুলে
আত্মাভিমানকে তার অনন্তকালের আলো দেবে ! হ্যাঁ, মুজিব বঙ্গবন্ধু
অখ্যাত বাংলাভাষী আমি ও আমার পিতা, আমার বংশধরেরা, চিরকাল
বেঁচে থাকবে আপনার ধ্বনি-দেয়া মর্ত্যলোকের অভূতপূর্ব বিস্ময়ে ।
কেবল আমার বাংশধরেরা নয়, আমার মতন আরো কোটি-কোটি
ভাষাসন্তানেরা বেঁচে থাকবে আপনার অমরত্বে, পৃথিবীর যেখানে থাকুক
তারা, তাদের প্রতিটি উচ্চারণে আপনার নায়কোচিত আত্মবলিদান
সেইসব যুবকের হাতে যারা নিজেরই মায়ের ভাষা বর্জনীয় ভেবে
রূপকথা-বর্ণিত রাক্ষসপুত্রের ভূমিকায় দানবের দেয়া স্বর্ণের বিনিময়ে
ভাবলো আপনাকে ও আপনার বাড়ির লোকেদের গুলিবিদ্ধ করলেই
মৌন হয়ে যাবে জয়ধ্বনি । হয়নি যে তা তো তারা এবং তাদের
দোসরেরা জীবৎকালেই জেনে গেছে । বাংলাভাষা তো ঘাসের মতন
কখনও শুকায় না ; জঙ্গলে আগুন লেগে অলিভ-পোশাক-পরা গাছ
ছাই হয়, কিন্তু সে-আগুন নিভে গেলে ঘাসেরা আবার আসে ফিরে--
যেমনই সে ঘাসেরা হোক, ছোটো-বড়ো-গরিব-বৈভবশালী, দ্রুত
ছোটে তারা জয়ধ্বনি দিতে-দিতে পৃথিবীর ভিজে বা শুকনো মাটিতে--
জানে ওই সবুজ ঘাসেরা আপনার পায়ের ধূলিকণা তাদের অমরত্ব
দিয়ে গেছে । যতোদিন পৃথিবীতে রয়েছে বাংলাভাষী আপনি আছেন
রক্তে সেই সব মানুষের পূর্বপুরুষ হয়ে, আদিবন্ধু বঙ্গভাষী হয়ে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন